দর্পণ ডেস্ক :
বর্তমানে একটি জনপ্রিয় নাম চ্যাট জিপিটি (ChatGPT)। শিক্ষা থেকে ব্যবসা সকল ক্ষেত্রে এর জনপ্রিয়তা বিপুল। বর্তমানে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৮০ মিলিয়ন। আপনি চ্যাট জিপিটির কাছে যে প্রশ্নগুলি জিজ্ঞাসা করবেন তার উত্তরগুলি আপনাকে নিবন্ধের মাধ্যমে বিস্তারিতভাবে দেখাবে। এই ব্যাপারে প্রযুক্তিতে অভিজ্ঞ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক গবেষক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি এর ডেটা সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক মোঃ আবুল আলা ওয়ালিদ বলেন চ্যাট জিপিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এক চমৎকার উদাহরণ। চ্যাট জিপিটি (ChatGPT) মূলত একটি জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইন্ড ট্রান্সফর্মার মডেল যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে মানুষের সাথে স্বাভাবিক ভাষায় যোগাযোগ করে। এর কাজের মূল ভিত্তি হলো ভাষার মডেলিং এবং ডিপ লার্নিং।
এটি সম্পূর্ণরূপে এক ধরনের চ্যাট বট। আপনি সহজেই চ্যাটিং এর মাধ্যমে তার সাথে কথা বলতে পারেন এবং আপনার যেকোন ধরনের প্রশ্নের উত্তর পেতে পারেন। আমরা যদি একে সার্চ ইঞ্জিনের ধরন হিসেবে বিবেচনা করি তাহলেও কোনো ভুল হবে না। এটি বর্তমানে ইংরেজি, বাংলা সহ আরো অনেক ভাষায় ব্যবহারের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে উপলব্ধ। আপনি এখানে লিখে যে প্রশ্নই করুন না কেন সেই প্রশ্নের উত্তর আপনাকে চ্যাট জিপিটি-এর মাধ্যমে বিস্তারিতভাবে প্রদান করা হবে। এটি শুধু তথ্যের দ্রুত প্রাপ্তি বা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর প্রভাব গভীর এবং বিস্তৃত। মোঃ আবুল আলা ওয়ালিদ বলেন শিক্ষাক্ষেত্রে এটি শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যক্তিগত সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে শেখার অভিজ্ঞতা সহজতর করে তুলেছে, এবং শিক্ষকরা এর মাধ্যমে শিক্ষণ প্রক্রিয়াকে আরও উদ্ভাবনী করে তুলতে পারছেন। ব্যবসায়িক খাতে এটি গ্রাহক সেবা থেকে শুরু করে ডেটা বিশ্লেষণ এবং কাস্টমাইজড কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে কার্যকরী সমাধান দিচ্ছে, ফলে সময় এবং খরচ উভয়ই সাশ্রয় হচ্ছে।
চ্যাট জিপিটি প্রযুক্তি কেবল কাজের গতি বাড়াচ্ছে না, বরং নতুন নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে, যা ভবিষ্যতে মানুষের জীবনযাত্রা, কর্মক্ষেত্র, এবং শিক্ষার ধারাকে আরও গভীরভাবে প্রভাবিত করবে।এটি কিভাবে কাজ করে তা জানতে চাইলে মোঃ আবুল আলা ওয়ালিদ বলেন চ্যাট জিপিটি মূলত একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক ভাষা মডেল, যা ট্রান্সফর্মার আর্কিটেকচার ব্যবহার করে কাজ করে। এটি প্রাথমিকভাবে বিশাল পরিমাণ টেক্সট ডেটার ওপর প্রশিক্ষিত হয়, যা মডেলকে ভাষার কাঠামো, শব্দের সম্পর্ক এবং বাক্যের প্রাসঙ্গিকতা বোঝাতে সাহায্য করে। এরপর এটি ফাইন-টিউনিং এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট কাজের জন্য দক্ষ করা হয়। ইনপুট টেক্সটকে টোকেন হিসেবে ভেঙে মডেল প্রতিটি টোকেনের প্রাসঙ্গিকতা বিশ্লেষণ করে, এবং তারপর সম্ভাব্য শব্দ বা বাক্যাংশের ভবিষ্যদ্বাণী করে জবাব তৈরি করে। চ্যাট জিপিটি প্রাসঙ্গিকতা ধরে রেখে ধারাবাহিক কথোপকথন পরিচালনা করতে সক্ষম এবং এর প্রতিটি উত্তর প্রবাবিলিস্টিক টেক্সট জেনারেশন পদ্ধতির মাধ্যমে তৈরি হয়। যদিও এটি অত্যন্ত দক্ষ, তবুও মডেলটি মাঝে মাঝে ভুল তথ্য প্রদান করতে পারে। সবমিলিয়ে, চ্যাট জিপিটি ভাষা প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে একটি বিপ্লবী মডেল, যা মানুষের সাথে স্বাভাবিক ভাষায় যোগাযোগের সক্ষমতা রাখে।