তামিমের স্বপ্নের অবসান হয়েছে গুলিতে

image-831536-1722225808.jpg

ডেস্ক রিপোর্ট: পরিবারে সচ্ছলতা আনার স্বপ্ন পূরণ হলো না নোয়াখালীর চাটখিলের পরকোট ইউনিয়নের পূর্ব শোশালিয়া গ্রামের আহসান হাবিব তামিমের (২১)। স্বপ্নের অবসান হয়েছে গুলিতে। ১৯ জুলাই বিকালে ঢাকার মিরপুর ১০নং গোল চক্কর এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন তামিম। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার নিথর দেহ মেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

তামিমের বাবা আবদুল মান্নান ঢাকার মিরপুরে একটি গাড়ির গ্যারেজে কাজ করেন। তিনি ওই এলাকাতেই ভাড়া বাসায় স্ত্রী ও তিন ছেলে নিয়ে থাকেন। তামিম মেজো ছেলে। অসচ্ছলতার কারণে বড় ছেলেকে লেখাপড়া করাতে পারেননি। বড় ছেলে বাবার সঙ্গে গ্যারেজে কাজ করেন। ছোট ছেলের বয়স ৫ বছর।

আবদুল মান্নান রোববার বিকালে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মোবাইল ফোনে বলেন, সেদিন পরিবারের সবার সঙ্গে দুপুরে খাওয়ার পর বিকাল ৪টার দিকে তামিম বাসা থেকে বের হয়। সন্ধ্যায় ৬টার দিকে আমরা জানতে পারি সে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে তার লাশ পাই।

তিনি আরও জানান, অতি কষ্টে তামিমকে লেখাপড়া করাতেন। তামিম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকের শিক্ষার্থী ছিলেন। ছেলের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে হিমশিম খেতেন তিনি। তাই পরিবারের অভাবের কথা চিন্তা করে তামিম মিরপুরে একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে খণ্ডকালীন চাকরি করতেন। তামিম মা-বাবাকে স্বপ্ন দেখিয়ে বলতেন-লেখাপড়া শেষ হলে তিনি পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে চাকরি করবেন। কিন্তু তার স্বপ্ন আর পূরণ হবে না। তামিম স্থানীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানান বাবা মান্নান। তামিমের চাচা মো. শাহীন জানান, তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। ২০ জুলাই ভোরে তার লাশ চাটখিলে নিজ গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এদিকে রোববার সকালে তামিমের মা-বাবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের সঞ্চয়পত্র ও নগদ টাকা প্রদান করেছেন বলে জানান আবদুল মান্নান।

Share this post

scroll to top