শীতের বৃষ্টিতে জনজীবনে ছন্দপতন : রবিবার থেকে খুলনা অঞ্চলে শৈত্য-প্রবাহ শুরু হতে পারে

Untitled-11-copy-7.jpg

খুলনার দর্পণ ডেস্ক : ভোর রাত থেকেই কুয়াশার দাপট ছিল বেশ। চলছে মৃদু শৈত্য-প্রবাহ। এমন হাড় কাঁপানো শীতে যখন জনজীবন কাহিল। এরইমধ্যেই বৃষ্টি জনজীবনকে আরও বিপর্যস্ত করে তুলেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শুরু হওয়া বৃষ্টির কারণে শীতের মাত্রা আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে খুলনায়। বৃষ্টি আর শীতে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে সড়কগুলো অনেকটাই ফাঁকা ছিল। অতি প্রয়োজন ছাড়া তেমন কাউকে ঘর থেকে বের হতে দেখা যায়নি। শীতের বৃষ্টির কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর শ্রেণির মানুষ।
গতকাল খুলনার আকাশে সূর্যের দেখা মেলেনি। এতে অনুভূত হয় তীব্র শীত। গতকাল সকাল সোয়া ৯টায় দিকে শুরু হয় শীত মৌসুমের প্রথম বৃষ্টি। এ কারণে আরও বেশি ঠা-া পড়েছে। আগামী কয়েকদিনে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। আবহাওয়া অফিস খুলনা বলছে, গতকাল সকাল সোয়া ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খুলনায় বৃষ্টি হয়েছে ৪ মিলিমিটার। এছাড়া বেলা ৩টা ৪৫ মিনিটে আরও ১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সবমিলে গতকাল খুলনায় বৃষ্টি হয়েছে ৫ মিলিমিটার।
গতকাল খুলনা ও এর আশপাশের এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়েছে। তবে কুয়াশা ও বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা খুব একটা না কমলেও শীতের অনুভূতি ছিল বেশি। হঠাৎ এই বৃষ্টিতে জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। শীতে সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েছে রাস্তায় কর্মরত সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ। বিশেষ করে রিক্সাওয়ালা, ফুটপাতের দোকানদার এবং রাস্তায় যাদের বসবাস তারা বিপদে পড়েছেন। কোনো প্রস্তুতি না থাকায় বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর মাথা গোঁজার জায়গাটুকুও ভিজে যায়। অল্প বৃষ্টি হলেও শীতের কারণে স্যাঁতস্যাঁতে পরিস্থিতি বিরাজ করে সবখানে। এদিকে খুলনার অধিকাংশ সড়ক, ড্রেনের সংস্কার কাজ চলমান থাকায় নগরবাসীকে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ছোট ছোট খানাখন্দে পানি জমে একাকার হয়ে যায়। কোথাও কোথাও ড্রেন আটকা থাকায় সেখানে পানি জমে জনভোগান্তি সৃষ্টি হয়।
নগরীর টুটপাড়া সেন্ট্রাল রোড এলাকার রিক্সাচালক মোঃ আরিফ হোসেন জানান, অন্যদিন শীত যতই থাকুক না কেন, ভোরেই রিক্সা নিয়ে রাস্তায় নামি। বৃহস্পতিবারও নেমেছিলাম। পরে বৃষ্টিতে নাজেহাল হয়ে পড়েছি। বৃষ্টি হবে বুঝতে পারিনি। ফলে বৃষ্টিতে অনেকটা ভিজতে হয়েছে। একদিকে শীত অন্যদিকে বৃষ্টি। খুব কষ্ট হইছে।
নগরীর মৌলভীপাড়া এলাকার সবজি বিক্রেতা আহম্মদ জানান, বৃষ্টির কারণে বেচাকেনা কমে গেছে। ভোগান্তিতেও পড়তে হয়েছে। সবজির ভ্যান রাস্তায় রেখে কোনোমতে এক বাড়ির সানসেডের নিচে আশ্রয় নিয়েছিলাম। পরে রাস্তার কাদা, বৃষ্টি একই সাথে তীব্র শীতের সঙ্গে যুদ্ধ করে পারিনি। তাই বাসায় ফিরে যাই। পরে জামাকাপড় পালটে আবার ভ্যান নিয়ে বের হই।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মোঃ আমিরুল আজাদ জানান, তীব্র শীতের কারণে আশপাশের এলাকা ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকতে পারে। এ মৌসুমে বৃষ্টি হওয়ায় শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। আজ শুক্রবার বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে রবিবার থেকে খুলনা অঞ্চলে শৈত্য-প্রবাহ শুরু হতে পারে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top