খুলনার দর্পণ ডেস্ক : পদ্মা সেতু চালু, মোংলা বন্দরে অবকাঠামো উন্নয়ন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পাটকল চালু ও খুলনা-মোংলা রেললাইন ঘিরে অর্থনীতির নতুন স্বপ্ন দেখছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। সেই সাথে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, সমুদ্রবন্দরভিত্তিক বাণিজ্যিক সম্ভাবনা কাজে লাগানো ও নতুন শিল্প কলকারাখানা গড়ে উঠলে কর্মসংস্থানে অপার সম্ভাবনার বিস্তার ঘটবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, খুলনার চলমান প্রকল্প বাস্তবায়ন, নৌ-সড়ক ও আকাশপথে ত্রিমাত্রিক যোগাযোগ অবকাঠামো গড়ে তোলা, বাণিজ্যবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি ও সমুদ্রবন্দরভিত্তিক সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে আঞ্চলিক অর্থনীতিতে আবারও ঘুরে দাঁড়াবে খুলনা।
জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ (সোমবার) খুলনায় আসছেন। নগরীর সার্কিট হাউস ময়দানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভাগীয় জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি। জনসভাস্থলে তিনি ২৪টি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর খুলনায় রাজনৈতিক জনসভা উপলক্ষ্যে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে পোস্টার, ফেস্টুন, প্যানা টাঙানো হয়েছে। সমগ্র নগরী সেজেছে উৎসবের রঙে।
প্রধানমন্ত্রীর খুলনায় আগমন উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও পাশর্^বর্তী এলাকার সংসদ সদস্যরা খুলনায় এসেছেন। জনসভাস্থলের পাশর্^বর্তী ভৈরব নদের জেলাখানা ঘাট ও রূপসা ঘাটে অতিরিক্ত ফেরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সার্কিট হাউজ মাঠে নৌকা ও পদ্মা সেতুর আদলে নির্মাণ করা হয়েছে ৯০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থ মঞ্চ। প্রায় ৪০০ অতিথি মঞ্চে বসার ব্যবস্থা থাকবে। মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক জানান, সমাবেশের দিন সার্কিট হাউস মাঠে থাকবেন নারী কর্মীরা। পুরুষ নেতাকর্মীরা থাকবেন মাঠের চারপাশের সড়কগুলোতে। মাঠ ছাড়াও নগরীর কাস্টমস ঘাট থেকে শিববাড়ি মোড়, জেলখানা ঘাট, সদর থানার মোড়, হাদিস পার্ক ও হাজী মুহসীন রোডে মাইক দেয়া হবে। শিববাড়ি মোড়সহ বেশ কয়েকটি স্থানে এলইডি মনিটরে দেখানো হবে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ। এছাড়া বাগেরহাট, পিরোজপুর ও গোপালগঞ্জ থেকে বাসযোগে যেসব পুরুষ নেতাকর্মী আসবেন তারা রূপসা ঘাটে নেমে ফেরিতে পার হবেন। এ জন্য রূপসা ঘাটে ৫টি ফেরি দেয়া হয়েছে। আর নারী কর্মীদের বহনকারী বাস নগরীর নতুন বাজার পর্যন্ত আসবে। এ ছাড়া জেলখানা ঘাটে ৩-৪টি ফেরি দেয়া হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের নেতাকর্মীর জন্য সকালে একটি স্পেশাল ট্রেন খুলনায় আসবে।
নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল রানা জানান, জনসভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ১০ লাখ মানুষের সমাগম ঘটানোর প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ওই দিন নগরীর রাজপথে নেতাকর্মীর ঢল নামবে।
এদিকে অবকাঠামো উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ একই সাথে খুলনার বিভাগীয় বিমানবন্দর, রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়াকে খুলনা শহরের সাথে যুক্ত করতে রূপসা নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ, পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহসহ ১৮ দফা দাবি জানানো হবে প্রধানমন্ত্রীকে। এসব দাবি পূরণ হলে ‘শিল্প নগরী’ হিসেবে হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে খুলনা।
এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে খুলনা। সার্কিট হাউস ময়দানে নৌকা ও পদ্মা সেতুর আদলে জনসভার মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে পোস্টার, বিলবোর্ড, প্ল্যাকার্ডে ছেয়ে গেছে গোটা নগরী। জনসভাস্থলে নির্বিঘেœ আসা-যাওয়ার জন্য রূপসা ঘাটে ফেরি পন্টুনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সমাবেশস্থলের আশপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে নগরীকে। জনসভাস্থলে আসা ও জনসভা শেষে যাতে লোকজন নির্বিঘেœ ফিরে যেতে পারে সেজন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালের ৩ মার্চ সাংগঠনিক জনসভায় যোগ দিতে খুলনায় আসেন প্রধানমন্ত্রী।
স্বপ্ন পূরণের গল্পগাঁথা খুলনায়
