জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি: ‘হয়তো রাস্তায় ভিক্ষা করতে হবে’

fuel-1-20220814175743.webp

আন্তর্জাতিক ডেস্ক……

বর্তমান সময়ে বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ। মাত্র এক সপ্তাহ আগে দেশটিতে জ্বালানি তেলের দাম ৫০ শতাংশের বেশি বাড়ানো হয়। সরকার বলছে, মূলত ইউক্রেন যুদ্ধের কারণেই জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। এর প্রতিবাদে লোকজন রাস্তায় নেমেছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এই বিক্ষোভের দৃশ্য বলে দিচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতেও আর্থিক সংকট বাড়ছে। শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশকেই ভাবিয়ে তুলছে। তার মধ্যেই বাংলাদেশে হুট করেই জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিকে মোটেও ভালো ভাবে দেখছেন না বিশ্লেষকরা।

উত্তরাঞ্চলের দিনাজপুর শহরের বাসিন্দা মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম। তিনি শাক-সবজি পরিবহনের কাজ করেন। এই কাজে তিনি যে ট্রাক ব্যবহার করেন তাতে পেট্রল নেওয়ার জন্য পাম্পে অপেক্ষা করছিলেন। তিনি জানান, বর্তমান পরিস্থিতির কারণে তিনি ভয় পাচ্ছেন যে, তাকে হয়তো শিগগির ভিক্ষা শুরু করতে হতে পারে।

কারণ দেশে প্রতি লিটার পেট্রলের দাম ৮৬ টাকা থেকে বেড়ে ১৩০ টাকা হয়েছে। ডিজেল-কেরোসিনের দামও ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। এক কথায় জ্বালানি তেলের এই অপ্রত্যাশিত দামের কারণে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম ৯ বছর ধরে একটি পরিবহন কোম্পানিতে কাজ করছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতেও তাকে এখন হিমসিম খেতে হচ্ছে।

৩৫ বছর বয়সী এই ব্যক্তি তার নিজ এলাকা থেকে সতেজ পণ্য-সামগ্রী রাজধানী ঢাকায় নিয়ে আসেন। তার দুই সন্তান। মা-বাবাকেও তিনিই দেখাশোনা করেন। কিন্তু জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মালিকের কাছ থেকে তিনি এখন পুরো বেতনও পাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, এখন আমি বাজারে গেলে পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত খাবারও কিনতে পারছি না। জ্বালানির দাম যদি এভাবে বাড়তে থাকে তাহলে আমি আমার মা-বাবার দেখাশোনা করতে পারব না। হয়তো আমার সন্তানদের স্কুলেও পাঠানো সম্ভব হবে না।

হতাশ কণ্ঠে তিনি বলেন, আমি যদি আমার চাকরি হারাই তাহলে হয়তো আমাকে রাস্তায় নেমে ভিক্ষা শুরু করতে হবে। দেশটির বেশিরভাগ সাধারণ পরিবারের মানুষই এখন এই পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই যাচ্ছে।

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও পড়েছে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top