ডিএনএ মিললেও সঞ্জয় রায়কে শাস্তি দেওয়ার বিপক্ষে অরিত্র

Aritra-67307725d1c7b.jpg

বিনোদন ডেস্ক : ডিএনএ মেলার পরও হুট করে সঞ্জয় রায়কে শাস্তি দেওয়ার পক্ষপাতি নন অরিত্র দত্ত বণিক। কিন্তু কেন? সে বিষয়টি লম্বা একটা পোস্টে বিশদে ব্যাখ্যা দিয়েছেন টালিউড অভিনেতা অরিত্র দত্ত বণিক। কী লিখেছেন সেখানে—

সম্প্রতি আরজি করকাণ্ডের চিকিৎসক তরুণীকে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় মিলেছে ‘বায়োলজিক্যাল এভিডেন্স’। এ ঘটনায় ডিএনএ রিপোর্ট সামনে এসেছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, আরজি করকাণ্ডের চিকিৎসক ধর্ষণের ঘটনায় নির্যাতিতার দেহ থেকে উদ্ধার নমুনা, অর্থাৎ ডিএনএ শুধু একজনের নমুনার সঙ্গেই মিলেছে। আর সেটি হলো সঞ্জয় রায়। আর এই তথ্য সামনে আসার পরপরই বহু লোক অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের শাস্তির দাবি তুলেছেন। তবে এ ক্ষেত্রে অভিনেতা অরিত্র দত্ত বণিক মনে করেন, চিকিৎসক ও বিচার কোনোটাই তাড়াহুড়ো করে হয় না।

অর্থাৎ হুট করে সঞ্জয় রায়কে শাস্তি দেওয়ার পক্ষপাতি নন অরিত্র। কিন্তু কেন? সে বিষয়টিও লম্বা একটা পোস্টে বিশদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন অরিত্র দত্ত বণিক। তিনি লিখেছেন— চিকিৎসা বিজ্ঞান ও বিচারব্যবস্থার একটা কমন জিনিস কেস হিস্ট্রি, ডকুমেন্টস ম্যানেজমেন্ট ও ইনভেস্টিগেশন। দুটোই সময় সাপেক্ষ এবং দুটোতেই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রেজাল্টে বদল হয়, সেই বদল সম্পূর্ণ বিপরীতে যেতে পারে। কিছু দিন আগে আমার বন্ধুর মাঝরাতে বুকে ভয়ানক ব্যথা, ঠিক হার্টঅ্যাটাকের মতো সিম্পটম, দম বন্ধ হয়ে আসছে, দ্রুত লোকাল চিকিৎসক এসে প্রেসার অক্সিজেন ইত্যাদি মেপে আশ্চর্য হলেন, প্রেসার ও অক্সিজেন নরম্যাল অথচ বুকে ভয়ানক যন্ত্রণা এমনকি জিভ চোখ সব স্টাডি করেও কোনো কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের সিম্বল পেলেন না। তবু পেশেন্ট যেভাবে অজ্ঞান হয়ে পড়ছিল, তিনি ইমিডিয়েটলি হার্ট ডিকঞ্জেশনের ওষুধ দিলেন। সেই রাতটা একটু স্টেবেল হলো। এরপর আরও বড় চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রায় মাসখানেক ধরে বুকের সব রকম টেস্ট হলো, স্ক্যান হলো, কিন্তু কিছুই নেই সব নর্মাল। দীর্ঘদিন পর আইডেন্টিফাই করা গেল পেশেন্টের হয়েছে স্পন্ডালাইটিস।

হ্যাঁ, এমনটিই ঘটেছে। অরিত্র বলেন, ঘাড়ের কাছের কিছু হাড়ের সমস্যা থেকে বুকের দিকে চাপ আসছে। মনে হচ্ছে, বুকের ব্যথা, কিন্তু আসলে সম্পূর্ণ বিপরীত বুকে কিছুই নেই হয়েছে পিঠে ও ঘাড়ে, সেখানে কোনো ব্যথা অনুভব হচ্ছে না। অত্যাধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান ব্যবহার করেও প্রচুর টেস্ট করিয়ে দীর্ঘদিন পর জানা গেল আসল কারণ। সেই মতো নতুন ট্রিটমেন্ট শুরু করায় পেশেন্ট ধীরে ধীরে ঠিক হলো। তার মানে এই নয় যে, পেশেন্টের চিকিৎসা শুরুতে হয়নি বা শুরুর দিকের চিকিৎসকরা সব ফালতু বা তারা কিছু জানে না।

চিকিৎসার এটিই নিয়ম আস্তে আস্তে উন্মোচিত হয় যে, আসল সমস্যা কী! বাইরে থেকে বুকে ব্যথা বা পেটে ব্যথা দেখে আসল ট্রিটমেন্ট হয়ে যায় না৷ একইভাবে বিচারব্যবস্থা, সঞ্জয়ের ডিএনএ মিলেছে মানে তাকেই কাল ধরে ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট দেওয়া যায় না।

অরিত্র বলেন, বিভিন্ন জিনিস একেক করে ট্রায়াল অ্যান্ড এরর করে বের করতে হবে, সে করেছে কিনা বা সে একাই করেছে কিনা? আর কারা আছে, কীভাবে আছেন? করলেও কেন করেছে এবং কীভাবে যোগ্য শাস্তি দিলে বিধান পাওয়া যাবে। শুধু বিজ্ঞানের সঙ্গে বিচারের একটাই বড় ফারাক— এখানে সংবিধান বা লিখিত স্ট্যাটিউটসের বাইরে হঠাৎ র্যাডিক্যাল কিছু করে দেওয়া যায় না।

Share this post

scroll to top