নৌবাহিনী প্রধানের খুলনা ও ভোলা জেলা পরিদর্শন

Navy-Chief-66e0c023f1586.jpg

ডেস্ক রিপোর্ট: সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তৃণমূল পর্যায়ে পরিদর্শন করছেন নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার তিনি খুলনা ও ভোলা জেলার সার্বিক নিরাপত্তা, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোর সুরক্ষা এবং যৌথ বাহিনীর কর্মকাণ্ড পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি নৌ কন্টিনজেন্ট, স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে বিরাজমান পরিস্থিতি মোকাবিলা করে একটি জনবান্ধব ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে নৌবাহিনী প্রধান আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকায় স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। এরই মধ্যে নৌবাহিনীর সহায়তায় উপকূলীয় অঞ্চলে থানাসমূহের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিভিন্ন থানায় পুলিশকে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রদান করছে নৌবাহিনী। দেশের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ ও বাণিজ্য ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখার প্রয়াসে আমদানি-রপ্তানির অন্যতম চালিকা শক্তি চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরের নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি বন্দরসমূহের সার্বিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে দেশের আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রাখতে বন্দরসমূহে দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর নিরাপদ যাতায়াত, বন্দরসমূহের সন্নিহিত এলাকায় অবস্থানকৃত বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর নিরাপত্তা প্রদান করছে। মৎস্য আহরণ অব্যাহত রাখতে নদী পথসমূহে নৌবাহিনীর টহল কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি দেশের রসদের যোগান নির্বিঘ্ন রাখতে অর্থনীতির যোগানদাতা ও উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠানসমূহে যেন কোনো প্রকার নাশকতা চালাতে না পারে সেজন্য নৌবাহিনী সর্বাত্মকভাবে প্রস্তুত রয়েছে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে (ফেনী, চট্টগ্রামের মিরসরাই, খুলনার পাইকগাছা) বন্যাকবলিত এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। নৌ কন্টিনজেন্টসমূহ বন্যা কবলিত এলাকায় বন্যার্তদের স্বাস্থ্য সেবা ও বন্যা পরবর্তী বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় নিয়োজিত রয়েছে।  ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় ৩০ শয্যার একটি অস্থায়ী ‘ফিল্ড হসপিটাল’ স্থাপন ও খুলনার পাইকগাছায় ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের মাধ্যমে স্থানীয়দের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহে থানা থেকে লুণ্ঠিত অস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হলেও উল্লেখযোগ্য সাড়া পাওয়া যায়নি। এ প্রেক্ষাপটে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে এসব অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার রোধে ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার এর আওতায় গত ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে সারা দেশে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যৌথ অভিযানের অংশ হিসেবে নৌ কন্টিনজেন্টসমূহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, মোংলা, বরগুনা, ভোলাসহ দেশের উপকূলীয় অঞ্চলসমূহে নাশকতা ও নব্য ডাকাত নির্মূলে টহল ও  চিরুনী তল্লাশী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী সকল প্রকার অপতৎপরতা প্রতিহত করে দেশে স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে সদা তৎপর রয়েছে।

দেশ একটি গঠনমূলক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ সময় সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণে এগিয়ে আসতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারের এ কালপর্বে সকলকে অরাজক কর্মকাণ্ড হতে বিরত থাকার আহবান জানান নৌপ্রধান। গণমাধ্যমের সহায়তা ও স্থানীয় জনমানুষের সঙ্গে একতাবদ্ধ হয়ে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় যতদিন সরকার চাইবে ততদিন অসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানে মাঠে নিয়োজিত থাকবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

Share this post

scroll to top