খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালিত

1692101542.80.jpg

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ….
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি ভবন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।

মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সকাল ৮টায় খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে ১৫ আগস্টে শাহাদাত বরণকারী জাতির পিতা ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

খুলনা জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ, কেএমপির পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক, রেঞ্জ ডিআইজি মঈনুল হক, জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান, মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ সময় পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।

সকাল ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে খুলনা জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান।

খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. হেলাল মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক, অতিরিক্ত রেঞ্জ ডিআইজি মো. নিজামুল হক মোল্যা, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলমগীর কবির, বীর মুক্তিযোদ্ধা সরদার মাহাবুবার রহমান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন মিন্টু। স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক দিবসের কর্মসূচির শুরুতে সকাল ৯টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়।

সকাল ৯টা ৫ মিনিটে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের প্রাক্কালে উপাচার্যের নেতৃত্বে শোকর ‌্যালি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে হাদী চত্বর ঘুরে কালজয়ী মুজিব চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। এ সময় ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী, ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ও শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। এর পরপরই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল, বিভিন্ন স্কুল (অনুষদ), বিভিন্ন ডিসিপ্লিন (বিভাগ), বিভিন্ন হল, শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স কল্যাণ পরিষদ ও বিভিন্ন সংগঠন এবং কর্মচারীদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় চারুকলা স্কুলের শিল্পী শশিভূষণ পাল আর্ট গ্যালারিতে প্রদীপ প্রজ্বলন ও ফিতা কেটে চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।

এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের এ শোক আজ শক্তিতে পরিণত হয়েছে। সেই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছেন, তা বাস্তবায়ন করতে হবে। ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক আয়োজিত এ চিত্র প্রদর্শনী দেখে সবাই অনুপ্রাণিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পরে তিনি চিত্র প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া শিল্পকর্মগুলো ঘুরে দেখেন।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী, চারুকলা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. নিহার রঞ্জন সিংহ, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস, চারুকলা স্কুলভুক্ত ডিসিপ্লিনসমূহের প্রধানসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় মন্দিরে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।

দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- বিকেলে সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ও মুখ্য আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এবং বিশেষ অতিথি ও আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস। সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। এছাড়া রয়েছে বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল ও বঙ্গবন্ধুর ওপর দিনব্যাপী ডকুমেন্টরি প্রদর্শন।

খুলনা প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০২৩ যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে।

শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনাতে স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০২৩ যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালনের লক্ষ্যে মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

খুলনা খান বাহাদুর আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. কাজী মোকলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান ও অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. আর্শেদ আলী মাতুব্বর।

এছাড়া আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠন, খুলনা প্রেসক্লাব, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালন করে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top