ডেস্ক রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবরের পরপরই নড়াইলের রাজপথে নেমে আসে হাজারো ছাত্র-জনতা। একপর্যায়ে জাতীয় সংসদের হুইপ নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজার শহরের বাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু, জেলা আওয়ামী কার্যালয়সহ অন্তত ২৫ নেতাকর্মীর বাড়ি, গাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
সোমবার বিকেলে শহরের চৌরাস্তায় বিজয়োৎসবের পর বিক্ষুব্ধ জনতা জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের বাসায় আগুন দেওয়াসহ ব্যাপক ভাঙচুর চালান। এসময় তারা নড়াইল পৌরসভার প্যানেল মেয়র কাজী জহিরুল হক, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাজীব মোহাম্মদ, আওয়ামী লীগ নেতা শরীফ হুমায়ুন কবীর, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এস এম পলাশ, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ সিংহ পল্টু, আ. লীগ নেতা মিলন খান, অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হাসান কায়েস, ব্যবসায়ী বুলু খান, রূপগঞ্জ টাউন ক্লাব, পোলট্রি ব্যবসায়ী বাটুল মজুমদার, ব্যবসায়ী নিপু সরকারের বাড়ি ও দেশি মদের দোকান ভাঙচুর করেছেন।
এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল সিকদারের মার্কেট ও সেখানে অবস্থিত সোনালী ব্যাংক রূপগঞ্জ শাখায় ভাঙচুর করা হয়েছে। শহরের টার্মিনালে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকালের সামনে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়। এ সময় কমপক্ষে ৩৫-৪০ জন আহত হয়, যার বেশির ভাগই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।
এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নড়াইল শহরের বরাশুলা গ্রামের মাজে খাঁ (৩২) নামের একজনের বাড়িতে হামলা করে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে দুর্বৃত্তরা। আহতকে চিকিৎসার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অলোক কুমার বাগচী তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া রাত সাড়ে আটটার দিকে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পেড়লী গ্রামে বিবদমান দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময়কালে একাধিক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে হতাহতদের সঠিক নাম পরিচয় জানা যায়নি।
এর আগে দুপুর থেকে নড়াইল শহরজুড়ে কয়েকহাজার আন্দোলনকারী রাস্তায় বিজয়ের স্লোগান দিতে থাকে। জেলা বিএনপি, জামায়াত, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা শহরে খণ্ড খণ্ড আনন্দ মিছিল বের করেন।