খুলনায় স্ত্রী হত্যার অভিযোগে ভূমি ব্যবসায়ি কারাগারে

17-1711549973-1.jpg

দর্পন রিপোর্ট:   খুলনার নিউ বিশ্বাস প্রপার্টিজের মালিক তারেক বিশ্বাসের বিরুদ্ধে স্ত্রী মোছা. মাহামুদা আক্তার মিলি (৩২) হত্যার অভিযোগে চারজনকে আসামি করে মামলার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার  খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-২ এর বিচারক জামিউল হায়দার হরিণটানা থানাকে মামলা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

আদালত মামলা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়ার পর হরিণটানা পুলিশ সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে। একইসঙ্গে মামলার প্রধান আসামি তারেক বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- তারেকের প্রথম স্ত্রী মোসা. নাসিমা (৩৫), তারেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মো. বিল্লাল ও বঙ্কিম অধিকারী।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মিলির মৃত্যু হলেও কয়েকদিন আগে মিলিকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ হলে তার মা সেলিনা বেগম মামলা করেন। এ ঘটনায় তারেককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, ২০১৯ সালে মিলির সঙ্গে তারেক বিশ্বাসের বিয়ে হয়। এর আগে তার আরেকটি বিয়ে ছিলো। তাদের বিচ্ছেদ হলে মিলিকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন তারেক। বিয়ের পর জমির ব্যবসা করার জন্য বিভিন্ন সময়ে মিলির পরিবারের কাছে যৌতুক দাবি করছিলেন তারেক। একপর্যায়ে মিলির পরিবার ২৫ লাখ টাকা দেয়। টাকা নেয়ার পর তারেক প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক শুরু করে। শহরে বাসা ভাড়া করে করে তার সংসারের যাবতীয় খরচ বহন করতেন তারেক।

এ নিয়ে মিলির সঙ্গে তারেকের বিভিন্ন সময়ে ঝগড়া হতো। এ সময় মিলির সংসারের সব খরচ দেওয়া বন্ধ করে দেন তারেক। এরইমধ্যে প্রথম স্ত্রীকে তিনি বাড়িতে নিয়ে আসেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়।

এদিকে, প্রথম স্ত্রীর বিষয়ে কথা বলায় মিলিকে প্রায়ই মারধর করতেন তারেক। সবশেষ গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তারেক ফের যৌতুকের দাবিতে মারধর করেন মিলিকে। নির্যাতনের একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে মিলিকে খুলনার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। মিলির মা খবর পেয়ে মেয়েকে দেখতে যান হাসপাতালে। সেসময় মিলি তার মাকে জানান, তারেক তার প্রথম স্ত্রী ও কর্মচারীদের নিয়ে মিলিকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার পরামর্শ করেছে।

ঐদিন রাত ১১টার দিকে মিলি হাসপাতালে মারা যান। এরপর তড়িঘড়ি করে অভিযুক্ত তারেক ময়নাতদন্ত করতে না দিয়ে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যান। এমনকি মিলির মা মেয়ের লাশ বুঝে নিতে চাইলেও তাকে লাশ বুঝিয়ে দেয়নি তারেক। মরদেহ গোসল করানোর সময় মৃতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।

সম্প্রতি মিলির মৃত্যুর একমাস পর মিলিকে বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের একটি ভিডিও ফাঁস হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, মিলি পরিবারের সদস্যদের বলছে আমাকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে। অপরদিকে তারেক তার মিলিকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করছে।

এ বিষয়ে হরিণটানা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর মঙ্গলবার রাতেই মামলা গ্রহণ করেছি। একইসঙ্গে ১ নম্বর আসামিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছি।

Share this post

scroll to top