কৃষ্ণের কুয়েটে ভর্তি হওয়ার পেছনে বাধা এক লাখ টাকা

khulba-20220823203633.webp

নিজস্ব প্রতিবেদক……….

কুয়েট, চুয়েট, রুয়েটসহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছেন কৃষ্ণপদ রায় (বামে), পাশে পাইকগাছা ইউএনও মোমতাজ বেগম
বাবা পেশায় একজন কলাবিক্রেতা। গ্রামে গ্রামে ঘুরে কলা বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়েই সংসার চলে। অর্থের অভাবে এসএসসি পরীক্ষার পর একমাত্র বোনের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। ছোট ভাইও সপ্তম শ্রেণির বেশি এগোতে পারেনি।
তবে সব বাধা জয় করেছেন কৃষ্ণ পদ রায়। গুচ্ছসহ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ও রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন অদম্য এ মেধাবী ছাত্র।
কৃষ্ণ ভর্তি হতে চান কুয়েটে। প্রকৌশলী হিসেবে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে চান তিনি। তবে ভর্তি হওয়ার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তা সংগ্রহ করতে না পেরে নিভে যেতে পারে প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন।
দলিত সম্প্রদায়ের অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী কৃষ্ণপদ রায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ প্রাথমিক খরচের জন্য তার প্রয়োজন এক লাখ টাকা। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ টাকার ব্যবস্থা করা তার পরিবারের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতিতে তার ভর্তির দায়িত্ব নিয়েছেন খুলনার পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমতাজ বেগম।
কৃষ্ণপদ রায় খুলনার পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলী ইউনিয়নের কাঠিপাড়া গ্রামের প্রতিবন্ধী শ্রীপদ রায়ের মেজ সন্তান। অনেক কষ্ট করে এ পর্যন্ত এসেছেন।
এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে ‘এ’ প্লাস ও এইচএসসিতে ‘গোল্ডেন এ’ প্লাস পান তিনি। ধারদেনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিলেও ভর্তির জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তা সংগ্রহ করা তার পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়।
এ অবস্থায় কৃষ্ণের পাশে দাঁড়িয়েছেন পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমতাজ বেগম। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন তার পক্ষে যতটুকু করা সম্ভব তা তিনি করবেন। পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
কৃষ্ণকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছেন ইউএনও। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘…কৃষ্ণ নামের দলিত সম্প্রদায়ের মেধাবী এই ছেলেটির খুব ইচ্ছে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। কিন্তু ভর্তির ফরম ফিলাপ করার টাকাসহ ভর্তি পরীক্ষা দিতে যাওয়ার মতো কোনো উপায় ছিল না। অনিশ্চিত ফলাফল। তারপরও সিদ্ধান্ত নিলাম পাশে দাঁড়ানোর। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুয়েটে সে চান্স পেয়েছে। মা প্রতিবন্ধী, বাবা নদীতে জাল ধরে। এখন সে স্বপ্ন দেখে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে পরিবারের হাল ধরার। সমাজে যারা বিত্তবান রয়েছেন তাদের প্রতি অনুরোধ রইলো এ ধরনের মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top