আত্মগোপনে বিসিবিকর্তারা, দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ কোন পথে

image-836567-1723355270.jpg

ক্রীড়া ডেস্ক : ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই সংস্কারের দাবি উঠেছে বিসিবিতে। কেননা দীর্ঘ দিন ধরেই বিসিবির শীর্ষস্থানীয় পদগুলো দখল করে রেখেছেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিরা। সে জায়গাতেই এবার সংস্কার চান দেশের ক্রিকেটভক্তরা। এমন পরিস্থিতিতে প্রায় প্রতিদিনই মিরপুরে বিসিবি প্রাঙ্গণে জড়ো হচ্ছেন ক্রিকেট সমর্থকরা। সমর্থকদের এ দাবির মুখে আত্মগোপনে বিসিবির বেশিরভাগ কর্তারা।

বিসিবির বোর্ডপ্রধান নাজমুল হাসান পাপন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলেন। এ ছাড়া বিসিবির সিংহভাগ কর্তা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। যার ফলে বিসিবির ২৫ পরিচালকের বেশিরভাগই এখন আসছেন না বিসিবিতে। অনেকটা আত্মগোপনে রয়েছেন তারা। বোর্ড চলছে দুই-তিনজন পরিচালকের সাহায্য নিয়ে। এ অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে— কোন পথে এগোচ্ছে দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ?

এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বিসিবির চলমান সংকট সমাধানে তার সঙ্গে বসে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ রূপরেখা ঠিক করতে চান বিসিবির কর্তারা। কেননা চলতি বছরই বাংলাদেশের মাটিতে হওয়ার কথা নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। যার সূচি এরই মধ্যে চূড়ান্ত করে ফেলেছে আইসিসি। তাই দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে নারী বিশ্বকাপ নিয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিসিবিকে।

ক্রীড়া উপদেষ্টা অবশ্য বলছেন, ‘টুর্নামেন্টটি বাংলাদেশের বাইরে যাবে না। কেননা দেশ গঠনের সময়ে এ রকম কিছু ঘটলে, সেটি দেশের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর হবে।’ তার এমন কথার বাস্তবায়ন করতে হলে দায়িত্বে থাকা বোর্ডকর্তাদের নিয়মিত বিসিবিতে আসতে হবে, যা এ মুহূর্তে হচ্ছে না।

স্বাভাবিকভাবেই তাই বিসিবিতে সংস্কার করতে হচ্ছে। যা করার আগে আইসিসির বিধিনিষেধও মাথায় রাখতে হচ্ছে সবাইকে। কেননা আইসিসির নিয়মের বাইরে গিয়ে ক্রিকেট বোর্ড পুনর্গঠনে সরকার হস্তক্ষেপ করলে নিষেধাজ্ঞায় পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে যার শিকার হয়েছে শ্রীলংকা ও জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট। বাংলাদেশ সেটি চায় না। তাই এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আইসিসিকে জানিয়ে তাদের পরামর্শ মতেই এগোতে চায় বিসিবি।

আর এ বিষয়ে ক্রিকেটসংশ্লিষ্টরা মনে করেন, জরুরি পরিস্থিতিতে আইসিসিকে বাস্তব অবস্থা জানিয়ে একটা সমাধান চাইতে পারে বিসিবি। কেননা বেশিরভাগ পরিচালকের অনুপস্থিতিতে নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়েছে বিসিবি। কাজেই আইসিসির কাছ থেকে নির্দেশনা নিয়ে বিসিবি চালানোর জন্য আপদকালীন একটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি হতে পারে, যারা পরে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পরিচালনা পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবে।

বিসিবিতে সংস্কারের দাবি নিয়ে শনিবার মিরপুর গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্রিকেট কোচ ও বিশ্লেষক নাজমূল আবেদীন। তার মতে, ‘তারা যদি ক্রিকেটের সত্যিকার অর্থেই সেবক হতেন, তাহলে কিন্তু আসতেন। আমার মনে হয় না তারা ক্রিকেটের সেবক ছিলেন। তাদের নিজস্ব এজেন্ডা ছিল। সে এজেন্ডাই তারা বাস্তবায়ন করেছেন।’

ক্রিকেট বোর্ডের নেতৃত্বের সমস্যার কথাও তুলে ধরেছেন তিনি, ‘দায়টা সবচেয়ে বেশি নেতৃত্বের। নেতৃত্ব ঠিক থাকলে বাকি জিনিসগুলো এমনিতেই ঠিক হয়ে যায়।’

Share this post

scroll to top