‘গণহত্যার’ দায় সাকিবেরও, তবুও বাংলাদেশের পক্ষে মাঠে বিতাড়িত সাংসদ!

image-838304-1723699978.jpg

ক্রীড়া ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী তীব্র আন্দোলনে যখন সারা দেশ উত্তাল; তখন ছাত্র-জনতা প্রত্যাশা করেছিল তাদের এমন দুঃসময়ে পাশে দাঁড়াবেন দেশের তরুণ প্রজন্মের আইকন সাকিব আল হাসান। দল-মত নির্বিশেষে সকল কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে প্রতিবাদী সাকিব একাত্মতা পোষণ করবেন ছাত্রদের আন্দোলনে। কিন্তু সে পথে হাঁটেননি বরাবর বিতর্কের জন্ম দেওয়া সাকিব।

এ বিষয়ে কোনো কথা তো বলেনই-নি বরং কানাডায় এক ভক্তের প্রশ্নের বিপরীতে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে সাকিব জানতে চেয়েছেন তার অবদান কি? বাড়িয়ে দিয়েছেন ভক্তদের ক্ষোভ। দেশে তার দল আওয়ামী লীগ যখন ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে, তখন নীরব থেকে মৌন সম্মতি দিয়ে গেছেন সাকিব। এমনকি পরিবার নিয়ে কানাডার চিড়িয়াখানায় পশুপাখি দেখে বেরিয়েছেন। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াননি তিনি। কিন্তু সেই সাকিবই এবার দেশের হয়ে মাঠে নামার অপেক্ষায়। গণহত্যার দায় এড়িয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে প্রস্তুত হচ্ছেন সাকিব। অথচ সংসদ বিলুপ্ত করায় তিনিও একজন বিতাড়িত সংসদ সদস্য। এতকিছুর পরও বাংলাদেশের পক্ষে তার এই মাঠে নামা নিয়ে কমবেশি ক্ষোভ আছে ভক্তদের মাঝে।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ভেঙে দেওয়া হয়েছে সংসদ। যার ফলে সংসদ সদস্য পদ হারিয়েছেন সাকিব। দেশে গ্রেফতারের শিকার হয়েছেন আওয়ামী লীগের অনেক রাজনীতিবিদ। কেউ কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। যারা এখনও পালাতে পারেননি তারা সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন। বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন ও মাশরাফি বিন মুর্তজা গা ঢাকা দিয়ে আছেন। সাকিবকে অবশ্য তেমনটি করতে হয়নি, তিনি আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে থাকায়।

তবে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, পাকিস্তান সিরিজ সামনে রেখে দেশে ফিরে প্রস্তুতি নিয়ে দলের বাকিদের সঙ্গে পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা ছিল সাকিবের। যদিও দেশের চলমান পরিস্থিতিতে দেশে না ফিরে সরাসরিই পাকিস্তানে উড়ে গিয়েছেন সাকিব। তাকে দলেও রেখেছে বিসিবি। যা নিয়েই উঠেছে বিতর্ক।

বহিষ্কৃত এমপি ও দেশে পা না রাখা সাকিব কীভাবে দলে? গণহত্যার দায় কীভাবে এড়াবেন সাকিব? এসব প্রশ্ন তুলেছেন বিসিবির প্রাক্তন সদস্য রফিকুল ইসলাম, ‘সাকিব বাংলাদেশের প্রাক্তন আইনপ্রণেতা হিসেবে গণহত্যার দায় এড়াতে পারেন না। যখন ছাত্রদের হত্যা করা হচ্ছিল, তিনি কখনও কোনও প্রতিবাদ করেননি। এই ছাত্রদের অনেকেই তাকে আইকন বলে মনে করতেন। তার উচিত ছিল প্রথমে বাড়িতে এসে ব্যাখ্যা দেওয়া যে কেন তিনি নীরব ছিলেন?’

তবে সাকিবকে দলে রাখার সিদ্ধান্তটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেই করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের অন্যতম পরিচালক ইফতেখার আহমেদ, ‘আমরা ক্রীড়া উপদেষ্টার সামনে দল পেশ করেছি। তিনি সাকিবকে দলে অন্তর্ভুক্ত করার বিরোধিতা করেননি। তিনি শুধু বলেছিলেন যে, দলকে যোগ্যতার ভিত্তিতে গঠন করা উচিত।’

Share this post

scroll to top