ডেস্ক রিপোর্ট: মৌলভীবাজারের কুলাউড়াসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি মুহিদুর রহমান শাওনকে অবশেষে সিলেট থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে কুলাউড়া থানার ওসি গোলাম আফসারের নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সিলেট থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
মুহিদুর রহমান শাওন কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের নর্তন গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলী মধু মিয়ার ছেলে।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাতে উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের তিলাশীজুড়া গ্রামে ব্রিজের ওপর ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের মৃত আছদ্দর আলীর ছেলে ব্যবসায়ী তৌহিদুল হায়দারের ওপর হত্যার উদ্দেশ্য অতর্কিত হামলা চালায় মুহিদুর রহমান শাওনসহ তার সহযোগীরা।
এ ঘটনায় গত ২০ ডিসেম্বর মুহিদুর রহমান শাওন (২৭), একই এলাকার মুজাহিদ ইসলাম (২৭) ও রুবেল মিয়াকে (৪২) অভিযুক্ত করে কুলাউড়া থানায় মামলা করেন ব্যবসায়ী তৌহিদুল। পুলিশ মামলার আসামি মুজাহিদুল ইসলাম ও রুবেল মিয়াকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠালেও অন্যতম আসামি মুহিদুর রহমান শাওন পুলিশি ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায়।
এদিকে মামলার তদন্ত শেষ করে চার্জশিট আদালতে পাঠান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুলাউড়া থানার এসআই আমির উদ্দিন। পরে আদালত মুহিদুর রহমান শাওনের ওপর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
শাওন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিল বলে জানা গেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও রাউৎগাঁও ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মুক্তাদির তোফায়েলের ছত্রছায়ায় সে স্থানীয় এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করেছে।
জানা গেছে, চলতি বছরের ২৫ মার্চ রাজনগর থানার মাথিউরা চা বাগান এলাকায় কুলাউড়া-মৌলভীবাজার সড়কে রাজনগর উপজেলার হাজীনগর চা-বাগান এলাকার বাসিন্দা মৃত কুদ্দুস মিয়ার ছেলে জলিল মিয়ার (৩৮) ওপর পূর্বশত্রুতার জেরে হামলা চালায় মুহিদুর রহমান শাওন ও রুবেল মিয়া। এ ঘটনায় মুহিদুর রহমান শাওন ও রুবেল মিয়াকে অভিযুক্ত করে রাজনগর থানায় মামলা করেন হামলার শিকার জলিল মিয়া।
এদিকে মুহিদুর রহমান শাওনের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার সদর থানায় আরেকটি মামলা করেন আমির আলী নামের আরেক ব্যক্তি। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানায় প্রতারণা ও মারামারির ঘটনায় মুহিদুর রহমান শাওনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে।
মামলার বাদী তৌহিদুল হায়দার বলেন, আমার ওপর হামলার ঘটনায় কুলাউড়া থানায় মামলা করি। মামলা তুলে নিতে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মুক্তাদির তোফায়েল, ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুর রহমান শাহিন, ব্যাংকার এনাম উদ্দিনের প্রভাব খাটিয়ে আমাকে বিভিন্ন সময়ে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে মুহিদুর রহমান শাওন ও রুবেল মিয়া। এমনকি গত ২০ মার্চ মৌলভীবাজার আদালত থেকে বের হওয়ার সময় আমাকে জোরপূর্বক তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে শাওন গং। পরে ওই ঘটনায় মৌলভীবাজার সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। দীর্ঘদিন শাওন আত্মগোপনে ছিল। দীর্ঘদিন পর তাকে গ্রেফতার করায় পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম আপছার বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি শাওন দীর্ঘদিন ধরে সিলেটে আত্মগোপনে ছিল। অবশেষে তাকে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। আসামি শাওনকে শুক্রবার বিকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে।