সংঘাত চাই না, যাকে খুশি ভোট দেবেন : শেখ হাসিনা

Untitled-1-copy-1.jpg

খুলনার দর্পণ ডেস্ক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য একান্তভাবে জরুরি মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষকে বিএনপি-জামায়াতের দুর্বৃত্তপরায়ণতার জবাব দিতে হবে। এখানে কেউ কাউকে বাধা দিতে পারেন না।
তিনি বলেন, ‘কোনোরকম সংঘাত আমি চাই না। আমি চাই এই নির্বাচন সত্যিকারভাবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে একটা মাইলফলক হয়ে থাকবে। আর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রা সুগম হবে।’
গতকাল ৩ জানুয়ারি বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবন থেকে ৫টি জেলা ও একটি উপজেলায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সারা দেশ আর্থসামাজিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে একটা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আসতে আমরা পেরেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো- বিএনপি-জামায়াতের চরিত্রটা হচ্ছে দুর্নীতি করা আর মানুষ খুন করা। তারা অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করে। এর থেকে জঘন্য কাজ আর কিছু হতে পারে না।’
২০১৩-১৪ সালের মতো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াত আবার ‘ভয়াল রূপ’ নিয়ে হাজির হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অগ্নিসন্ত্রাস, ট্রেনে আগুন দেয়ায় মা-শিশু পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। এই দৃশ্য সারা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। শুধু তাই না, রেললাইনের ফিশপ্লেট খুলেছে, বগি ফেলে দিয়ে এক্সিডেন্ট ঘটিয়ে মানুষ মারার ফাঁদ পাতে তারা। যাত্রীবাহি বাসে আগুন দেয়। চিফ জাস্টিসের বাড়িতে হামলা করেছে, জাজেস কোয়ার্টারে হামলা করেছে। সাংবাদিকদের পিটিয়েছে। পুলিশকে কীভাবে পিটিয়ে মেরেছে আপনারা দেখেছেন। এই ধরনের জঘন্য কর্মকা- তারা করেছে।’
‘‘দেশের মানুষকে এই দুর্বৃত্তপরায়ণতার জবাব দিতে হবে’ মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা নৌকায় ভোট দিয়ে, আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করে এর জবাব দেবেন এবং উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখবেন, সেটাই আমরা চাই। আজকে বিভিন্ন জায়গায় আমাদের প্রার্থী আছে। সেই সঙ্গে আমরা আমাদের নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছি। আমাদেরই স্লোগান- ‘আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো।’ কাজেই আপনাদের পছন্দ মতো ভোট দেবেন। কিন্তু কোনোরকম গ-গোল আমি চাই না। কোনোরকম কোনো দুর্ঘটনা বা কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব যেন না থাকে। সহনশীলতা দেখাতে হবে। নির্বাচনে যার যার ভোট শান্তিমতো দেবে এবং সেই পরিবেশটা আমাদের রক্ষা করতে হবে।’
এই নির্বাচনটা বাংলাদেশের জন্য একান্তভাবে জরুরি, সেটি মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে অনেক রকম খেলা অনেকে খেলতে চায়। যারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করে না, জয়বাংলা স্লোগান যারা নিষিদ্ধ করে, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ যারা নিষিদ্ধ করে দেয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যারা ধ্বংস করে-তারা দেশটাকেই ধ্বংস করবে। দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে। সেটি যেন করতে না পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেই লক্ষ্য নিয়ে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে মানুষ যার যার ভোটের অধিকার প্রয়োগ করবে, যার যার ইচ্ছে মতো ভোট দেবে। এখানে কেউ কাউকে বাধা দিতে পারেন না। কোনোরকম সংঘাত আমি চাই না। আমি চাই, এই নির্বাচনে সত্যিকারভাবে একটা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। যে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তার পছন্দ মতো প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে। যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে একটা মাইলফলক হয়ে থাকবে। আর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রা সুগম হবে।’
২০ ডিসেম্বর সিলেট থেকে আওয়ামী লীগের আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। ওই দিন হজরত শাহজালাল (রহঃ) ও হজরত শাহপরানের (রহঃ) মাজার জিয়ারতের পর দলের নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দেন তিনি।
এরপর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন জেলায় নির্বাচনী জনসভা করছে আওয়ামী লীগ। এতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবন থেকে জনসভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top