প্রধান শিক্ষক-অধ্যক্ষের হাতে নগদ অর্থে লাগাম, লেনদেনও ব্যাংকে

1676720621.EDU-BG.jpg

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট…
এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে।

এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেশিভাগের ক্ষেত্রেই অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব অভিযোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিরুদ্ধেই বেশি শোনা যায়। এসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠান প্রধান কত টাকা হাতে রাখতে পারবেন, কত টাকা ও কীভাবে ব্যয় পরিচালনা করা হবে, অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কীভাবে হবে সে সব বিষয় নির্ধারণ করে দিয়ে ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৩’ প্রণয়ন করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এ লক্ষ্যে সম্প্রতি এক কর্মশালায় অংশীজনদের মতামত নিয়ে খসড়া তৈরি করেছে। খসড়াটির ওপর মতামত নিয়ে তা চূড়ান্ত করা হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট অংশীজন সূত্রে জানা যায়, বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসে। একটি এমপিওভুক্ত স্কুলের অনিয়মের অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে জমা পড়ে। তা যাচাই বাছাই করতে গিয়ে সেখান থেকে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য নীতিমালা তৈরির নির্দেশনা আসে। এতে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিদা নিশ্চিত হবে।

কর্মশালায় অংশ নেওয়া একজন শিক্ষক জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আয় এবং ব্যয় কীভাবে হবে তা নীতিমালায় থাকবে। প্রতিষ্ঠান প্রধান কত টাকা নগদ হাতে রাখতে পারবেন তা আলোচনা হয়েছে। খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী স্কুলের প্রধান শিক্ষক ১০ হাজার টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের কলেজ অধ্যক্ষ ১৫ হাজার টাকা এবং ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ২০ হাজার হাতে রাখতে পারবেন। আর সব লেনদেন হবে ব্যাংকের মাধ্যমে। অনাকাঙ্ক্ষিত কারণ ছাড়া দুই দিনের বেশি টাকা হাতে রাখতে পারবেন না।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি খণ্ডকালীন শিক্ষক বা নন-এমপিও শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া বাবদ অর্থ প্রতিষ্ঠান থেকে মেটানের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে ক্রয় কমিটি, অডিট কমিটিসহ চারটি উপকমিটি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সিনিয়র শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে এসব কমিটি গঠিত হবে।

ব্যবস্থাপনা কমিটির একজন জানান, ব্যাংকের মাধ্যমে টিউশন ফি আদায় করার জন্য খসড়ায় বলা হয়েছে। নগদ কোনো বেতন-টিউশন ফি আদায় করা যাবে না। মোবাইল ব্যাংকিয়ের ওপরে গুরুত্বারোপ করা হয়।

এছাড়াও, প্রতিষ্ঠানে উন্নয়মূলক কাজগুলো সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষক এবং গভর্নিং বডি একসঙ্গে করবে।

নীতিমালা তৈরির কর্মশালায় অংশ নেওয়া একটি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নাম প্রকাশ না করে বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধান কত টাকা ব্যয় করতে পারবেন, কত রাখতে পারবেন- এমন যেসব প্রস্তাব আসছে তা প্রতিষ্ঠানের জন্যই ভালো। এগুলো বাস্তবায়ন হলে মূলত লেখাপড়ার মান কীভাবে উন্নয়ন করা যায় সে দিকেই মূল লক্ষ্য হবে।

বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করতে বলা হয়েছে। এরপর শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি দেখে তা চূড়ান্ত করবেন। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top