খুলনার দর্পণ ডেস্ক : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, ইংরেজি দৈনিক নিউনেশনের প্রকাশক বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন আর নেই। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মইনুল হোসেনের জুনিয়র ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ে ছাড়াও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মইনুল হোসেনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা রাজু আহমেদ জানান, রাজধানীর গুলশানে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। আজ রবিবার বাদ জোহর সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় দ্বিতীয় জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
এদিকে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোক-সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
মইনুল হোসেন ২০০৭ সালের বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্য, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ছিলেন। এছাড়াও তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক, দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার জ্যেষ্ঠ সন্তান। ১৯৬১ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তারপরে মিডল টেম্পল এ আইনবিষয়ক পড়াশোনা করেছেন। ১৯৬৫ সালে বার থেকে ব্যারিস্টার-ইন-ল ডিগ্রি অর্জন করেন।
মইনুল হোসেন ১৯৭৩ সালে পিরোজপুর থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে বাংলাদেশ পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার প্রচলন করলে তিনি তার পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন।
শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পরে তিনি খন্দকার মোশতাক আহমেদের পরিচালিত দল ডেমোক্র্যাটিক লীগ এ যোগ দেন এবং ৩ নভেম্বর মোশতাক সরকার এর পতন পর্যন্ত তিনি ডেমোক্র্যাটিক লীগেই ছিলেন।
তিনি বাংলাদেশ এর সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০০-২০০১ মেয়াদে সুপ্রিমকোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।