খুলনার দর্পণ ডেস্ক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শ্রমনীতির কারণে বাংলাদেশের পোশাক খাতে কোনো প্রভাব পড়বে না। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
ড. মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ থেকে সস্তায় ও সময়মতো পণ্য পান বলেই কেনেন। আমেরিকার সরকার বললেই ব্যবসা বন্ধ হয় না, ব্যবসা হয় মূলত দুই দেশের প্রাইভেট উদ্যোগে। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমনীতি নিয়ে আমাদের এখানে কোনো প্রভাব পড়বে না। এ নিয়ে দুশ্চিন্তারও কারণ নেই। তবে শ্রমিকদের কল্যাণে যেকোনো পদক্ষেপে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শ্রমনীতির ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না। যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে ব্যবসা হচ্ছে না? আমাদের এখানে যুক্তরাষ্ট্রের কোটা উঠে যাওয়ার পর অনেকেই দুশ্চিন্তা করেছিলেন। পরে দেখা গেল এটার কোনো প্রভাব পড়েনি।
গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র-সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, এটা একটি রুটিন বৈঠক। এই বৈঠকের বিষয়ে আপনারা (সাংবাদিকরা) জানলেন কেমন করে? আপনারা সব কিছুই জেনে যান!
যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাস থকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে শ্রমনীতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, দূতাবাস মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। সেটা দিতেই পারে। আমি বিস্তারিত জানি না। তবে আপনাদের মধ্যে দেশপ্রেমের অভাব আছে বলে আপনারা এসব নিয়ে নিউজ করেন। অন্য কোনো দেশের সাংবাদিকরা এসব নিয়ে নিউজ লিখতেন না।
অপরদিকে, নতুন মার্কিন শ্রমনীতি নিয়ে কোনো চাপ অনুভব করছি না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। গতকাল ৩০ নভেম্বর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি বাংলাদেশে নেই। শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের সঙ্গে বাংলাদেশের নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমনীতি গ্লোবাল ইস্যু জানিয়ে তিনি বলেন, যারা ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে কাজ করেন, তাদের বিরুদ্ধে যেন কোনো পদক্ষেপ নেয়া না হয়, সেই চেষ্টা থাকতে হবে। এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া।
আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনো সুযোগ পাই না উল্লেখ করে বাণিজ্যসচিব বলেন, তাই নতুন মার্কিন শ্রমনীতি নিয়ে কোনো চাপ অনুভব করছি না। ইতোমধ্যে আমাদের অনেক অর্জন হয়েছে। আমার যতটুকু জ্ঞান আছে, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয়ার বিধান ডব্লিউটিওর (বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা) আইনে নেই। কিন্তু কেউ যদি অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা দেয়, সেই সুবিধা বাতিল করতে পারে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যা করার করতে হবে। ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
সচিব বলেন, আমাদের মোট রপ্তানির মাত্র ১৭ শতাংশ হয় যুক্তরাষ্ট্রে। আর ইউরোপে করে থাকি ৫৫ থেকে ৬০ ভাগ। যথেষ্ট শুল্ক দিয়েই আমরা যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক পাঠাই। আমরাও চাই আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখতে।