স্ত্রীর অভিযোগের জবাব দিলেন নওয়াজউদ্দিন

aliya-risngbd-2303061050.jpg

বিনোদন ডেস্ক ……

ভালোবেসে আলিয়া সিদ্দিকীকে বিয়ে করেন বলিউড অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী। এ দম্পতির এক কন্যা ও এক পুত্রসন্তান রয়েছে। পুত্রসন্তানের স্বীকৃতি না দেওয়া, স্ত্রীকে খাবার না দেওয়াসহ অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে এই তারকা অভিনেতার বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহ চরমে পৌঁছেছে; যা গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত।

কয়েক দিন আগে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে রাতের বেলায় আন্ধেরির বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেন আলিয়া। এ নিয়ে কয়েকটি ভিডিও নিজের ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন তিনি। তবে এসব বিষয় নিয়ে পুরোপুরি মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন নওয়াজউদ্দিন। ইনস্টাগ্রামে এক বিবৃতি পোস্ট করার মাধ্যমে নীরবতা ভাঙলেন এই অভিনেতা। বিবৃতির ক্যাপশনে নওয়াজউদ্দিন লিখেন— ‘এসব অভিযোগ নয়, আমার আবেগ।’

নওয়াজউদ্দিন তিনটি ভাগে এ বিবৃতি পোস্ট করেছেন। প্রথম অংশে নওয়াজউদ্দিন বলেন, ‘নীরব থাকার কারণে আজ আমি সবখানে খারাপ মানুষ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছি। আমি নীরব ছিলাম তার কারণ হলো, এই সব তামাশা কোথাও না কোথাও আমার বাচ্চারা পড়বে। এক পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে সোশ্যাল মিডিয়া, সংবাদমাধ্যমে আমার চরিত্র হননের বিষয়টি মানুষ খুব উপভোগ করেছেন।’

‘প্রথমত আমি এবং আলিয়া বেশ কয়েক বছর ধরে একসঙ্গে থাকি না। এরই মধ্যে আমাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। তবে আমরা এতদিন আমাদের বাচ্চাদের জন্যই বোঝাপড়া করছিলাম। কেউ কি জানেন, আমার বাচ্চারা কেন ভারতে? গত ৪৫ দিন ধরে তারা স্কুল যাচ্ছে না। স্কুল থেকে আমাকে প্রতিদিন চিঠি পাঠাচ্ছে। আমার বাচ্চাদের গত ৪৫ দিন ধরে বন্দি করা হয়েছে এবং দুবাইতে তাদের স্কুলের পড়া তারা মিস করছে।’ বলেন নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী।

আলিয়া অভিযোগ করেন পুত্র ইয়ানকে নিজের সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি দিতে নারাজ নওয়াজউদ্দিন। কিন্তু এ অভিযোগ সত্য নয়। তা উল্লেখ করে এই অভিনেতা বলেন— ‘এই গ্রহের কোনো বাবা-মা কখনো চাইবে না তাদের বাচ্চাদের পড়াশোনা বাধাগ্রস্ত হোক বা তাদের ভবিষ্যত থমকে যাক। প্রত্যেক বাবা-মা তাদের সন্তানদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেন। আমি আজ যা উপার্জন করছি, তার সবই আমার দুই বাচ্চার জন্য। আর এটি কোনো ব্যক্তি পরিবর্তন করতে পারবে না। আমি শোরা এবং ইয়ানকে ভালোবাসি। তাদের ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে আমি যেকোনো প্রান্তে যাব। এখন পর্যন্ত সমস্ত মামলা আমি জিতেছি এবং আমার বিশ্বাস অব্যাহত রাখব বিচার বিভাগের ওপর। ভালোবাসা কাউকে আটকে রাখা নয়, একজনকে সঠিক পথে উড়তে দেওয়া।’

অর্থের জন্য আলিয়া এত মামলা করেছে বলে দাবি নওয়াজউদ্দিনের। তা উল্লেখ করে এই অভিনেতা বলেন, ‘আলিয়া শেষ চার মাস দুবাইতে বাচ্চাদের একা ছেড়ে এসেছিল। অর্থ দাবি করার জন্য বাচ্চাদের এখানে নিয়ে আসে। গত দুই বছর ধরে প্রতি মাসে আলিয়াকে ১০ লাখ রুপি করে দিয়েছি। আমার বাচ্চাদের সঙ্গে দুবাই যাওয়ার আগে ৫-৭ লাখ রুপি করে দিয়েছি (বাচ্চাদের স্কুলের ফি, চিকিৎসা, যাতায়াতসহ অন্যান্য খরচ বাদে)। বাচ্চাদের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছিলাম। কিন্তু সেটা আলিয়া বিক্রি করে নিজের জন্য ব্যয় করেছে। মুম্বাইয়ের ভারসোভাতে সমুদ্রমুখী বিশাল একটি অ্যাপার্টমেন্ট বাচ্চাদের জন্য কিনে দিয়েছি। বাচ্চারা ছোট হওয়ায় এর সহ মালিকানায় আলিয়াকে রাখা হয়েছে। দুবাইতে বাচ্চাদের জন্য একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া করে দিয়েছি, যেখানে আলিয়া আরামে বসবাস করছে। আসলে আলিয়া আমার কাছে আরো অর্থ চাইছে। যার জন্য আমার মা ও আমার নামে এতগুলো মামলা করেছে। এটা আলিয়ার স্বভাব। এর আগেও সে এমনটা করেছে। চাহিদা মতো অর্থ পাওয়ার পর সে মামলা তুলে নিয়েছে।’

কয়েক দিন আগে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেন আলিয়া। এ বিষয়ে নওয়াজউদ্দিন বলেন, ‘আমার বাচ্চারা যখন ভারতে আসে তখন তারা তার দাদির সঙ্গে পুরোটা সময় কাটায়। কেউ তাদের কীভাবে বাড়ি থেকে বের করে দিতে পারে? ওই সময়ে আমি বাড়িতেই ছিলাম না। আলিয়া তো সব জায়গার ভিডিও করে, যখন তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়, তখন কেন ভিডিও করেনি সে? আমার সুনাম নষ্ট করা, ক্যারিয়ার নষ্ট করা এবং আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার জন্য এসব করেছে সে। আর এই নাটকে বাচ্চাদের যুক্ত করেছে সে।’

২০০৯ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন নওয়াজউদ্দিন-আলিয়া। এ দম্পতির এক কন্যা ও এক পুত্রসন্তান রয়েছে। আলিয়ার আসল নাম অঞ্জনা পান্ডে। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নওয়াজউদ্দিনকে বিয়ে করে নাম রাখেন আলিয়া। মূলত, ২০২০ সালে নওয়াজউদ্দিন-আলিয়ার দাম্পত্য কলহের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top