প্রধানমন্ত্রী রূপসা পাড়ে আসছেন কাল : প্যানা পোস্টারে ভরে গেছে নগরী, চারদিকে সাজ সাজ রব

Untitled-5-copy-3.jpg

খুলনার দর্পণ ডেস্ক : আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার ১৩ নভেম্বর খুলনায় আসছেন। সার্কিট হাউজ মাঠে তিনি আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভাগীয় সমাবেশে বক্তৃতা করবেন। দিনটিকে ঘিরে নগরীকে সাজানো হয়েছে এক ভিন্ন রূপে। তোরণ, প্যানা, পিভিসিসহ বিভিন্ন জিনিসে ভরে গেছে গোটা নগরী। আলোকসজ্জায় সন্ধ্যার পর নগরীকে নিয়ে যায় এক অন্য রূপে। নিচে নৌকা আর ওপরে পদ্মা সেতুর আদলে তৈরি হচ্ছে সুবিশাল মঞ্চ। জনসভায় ১০ লাখের ওপরে মানুষের সমাগম হবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীল নেতারা। একই সাথে তিনি উন্মোচন করবেন ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের। দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। এদিকে সভানেত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন দলীয় কার্যালয়ে চলছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নিয়মিত সভা এবং অনুষ্ঠিত হচ্ছে আনন্দ র‌্যালি ও শোভাযাত্রা। অনুষ্ঠানস্থল ও নগরজুড়ে মাইক থাকবে তিন শতাধিক।
জানা যায়, দীর্ঘ ৫ বছর ৮ মাস ১০ দিন পর দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা খুলনা আসছেন জনসম্মুখে। তাঁর আগমনকে ঘিরে খুলনা নগরীর যতদূর দেখা যাবে চোখে পড়বে প্যানা, পিভিসি ও পোস্টারে প্রচারণা। নেতাদের নিজের ছবির সাথে সেখানে স্থান পেয়েছে জাতির পিতাসহ রাজ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ছবি। আছে কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবিও। আর অলিগলির এমন কোনো যায়গা নেই যেখানে তৈরি হয়নি তোরণ। এ সংখ্যা দুই শতাধিক। অনেক যায়গায় আবার নৌকাসহ তৈরি হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা। অপরদিকে সন্ধ্যার পর এলইডিসহ বিভিন্ন বাতির রঙিন আলো মোহিত করেছে নগরবাসীকে। সড়কের দুই পাশসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। এমন দৃশ্য কাউকে কাউকে ক্যামেরায় বন্দী করতেও দেখা যায়।
জনসভাস্থলে তৈরি হচ্ছে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় মঞ্চ। যার দৈর্ঘ্য হবে ১৩০ ফুট ও প্রস্থ ৪০ ফুট। নিচের অংশ থাকবে নৌকাকৃতির। আর ওপরের অংশে ১২০ ফুট হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর আদলে। তার ওপরে থাকবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুই তণয়া শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার ছবি। তিন স্তর বিশিষ্ট এই মঞ্চে ৪০০ জন নেতা এক সাথে বসতে পারবেন। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে দলীয় নেতাকর্মীরাও উৎফুল্ল প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে। তারা জানান, আমরা অধীর আগ্রহে আছি কখন নেত্রী আসবেন আর কখন তাঁর কথা শুনব। নেতাকর্মীরা এও মনে করেন আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য দিক নির্দেশনামূলক ভাষণ দেবেন তিনি। একই সাথে স্বাধীনতাবিরোধীদের জ্বলাও পোড়াও কর্মকা- রাজপথে থেকে কিভাবে মোকাবেলা করা হবে সে বিষয়েও নির্দেশনা দেবেন। এছাড়া অনেকেই উদগ্রীব তাঁকে এক নজর সামনে থেকে দেখার জন্য।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পুলক কুমার ম-ল বলেন, ১০টি মন্ত্রণালয়ের ২৯ উন্নয়ন প্রকল্পের উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে ২৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। জনসভা মঞ্চের পাশেই থাকবে আর একটি মঞ্চ, সেখান থেকে তিনি উদ্বোধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী জানান, ১০ লাখের ওপরে মানুষের এখানে সমাগম হবে। স্মরণকালের সব চেয়ে বড় মঞ্চ তৈরি হচ্ছে। যার দৈর্ঘ্য হবে ১৩০ ফুট ও প্রস্থ ৪০ ফুট। এর ১২০ ফুট হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর আদলে। তিন স্তর বিশিষ্ট এই মঞ্চে ৩৮০ জন নেতা বসতে পারবেন। এছাড়া নগরী ও জেলায় তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ডিজাইনের তোরণ। সব মিলিয়ে দুই শতাধিক তোরণ হবে এই সমাবেশকে ঘিরে। এছাড়া অন্যান্য কাজও প্রায় সম্পন্ন।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, এ জনসভা দলের খুলনা বিভাগীয় জনসভা। সভায় মানুষের ঢল নামবে। জনসভাকে জনসমুদ্রে রূপ দিতে আমরা পোস্টার, তোরণ, প্যানা ও মাইক দিয়ে প্রচারণা করছি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছাড়াও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। সবাই যার যার মতো সভা করে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছে। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে থাকবে মাইক, যাতে করে দূর থেকে সকলে সভানেত্রীর কথা শুনতে পারেন। ঢকা থেকে মাইক আনা হচ্ছে। সমাবেশস্থল ছাড়াও নগর জুড়ে তিন শতাধিক মাইক থাকবে যাতে করে দূরে থেকেও মানুষ নেত্রীর কথা শুনতে পান।
উল্লেখ্য, দলীয় সভায় ভাষণ দেয়ার জন্য আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ খুলনায় এসেছিলেন ২০১৮ সালের ৩ মার্চ। সেবার তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছিলেন। এরপর তিনি ব্যক্তিগত সফরে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি খুলনা সফরে এসেছিলেন। তিনি দিঘলিয়া উপজেলার নগরঘাট এলাকায় তাঁর মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের নামে ক্রয়কৃত জমি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেছিলেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top