ঢাবির ‘মরণফাঁদ’ খ্যাত পুকুরই এখন আশীর্বাদ

1680949440.DU-pond.jpg

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট…..
ইট-পাথরের শহরে এখনো সবুজে ঘেরা ২৫৪ একরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। নানা ঐতিহাসিক নিদর্শনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল, শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক হল ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে রয়েছে আশীর্বাদপুষ্ট পানির আধার তথা পুকুর।

যদিও বঙ্গবন্ধু হল ছাড়া বাকি দুই পুকুরে প্রায়ই শিক্ষার্থীদের ডুবে প্রাণহানির ঘটনার জন্য এ দুটোকে মরণফাঁদ হিসেবে চিহ্নিত করা হতো। তবে সম্প্রতি রাজধানীর বঙ্গবাজারে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিসের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে কাজ করেছে শহীদুল্লাহ হলের পুকুরটি।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের এই পুকুরেই সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে। এই পুকুরের গভীরতা অনেক বেশি। প্রায় ৪০ ফুট। স্বাধীনতার পর থেকে এখানে এ পর্যন্ত প্রায় ২৮ জন শিক্ষার্থী ও ঢাবি বহির্ভূত ব্যক্তিদের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে গত ১৫ বছরে শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক হলের পুকুরে ডুবে মৃত্যু হয়েছে তিন শিক্ষার্থীর। ১৯২১ সালে খননকৃত এ পুকুরে আগেও মৃত্যুর কথা জানা যায়।

অপরদিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর হলের পুকুরটি ময়লার স্তুপ থেকে পরিষ্কার করে সংস্কার করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী খালেদ বাংলানিউজকে বলেন, পুকুর আমাদের পরিবেশের জন্য খুবই দরকারী। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এটার মেইনটেইনেন্স ঠিকমতো হয় না। এ কারণে পুকুরে একটা বড় ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। নিয়মিত পুকুর পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি পানি পরীক্ষা করতে হবে। কারণ অগ্নি দুর্ঘটনায় এসব পুকুর আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে। শিক্ষার্থীদেরও সচেতন হতে হবে। সাঁতার না জেনে বা দুর্বল শরীরে পুকুরে নামলে ঝুঁকি তৈরি হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাপটে পুকুর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই বিশ্ববিদ্যায়ের মাস্টারপ্ল্যানেও পুরনো পুকুর সংরক্ষণের পাশাপাশি নতুন ওয়াটার বডি তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। বঙ্গবাজারে শহীদুল্লাহ হলের পুকুরের পানি দিয়ে আগুন নেভানোর ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়েও দুর্ঘটনা রোধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

হলের পুকুরে সংস্কার কাজ পরিচালনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, হলের পুকুরটা শিক্ষার্থীদের ব্যবহার উপযোগী রাখতে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। পানির পরিশুদ্ধির জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পানির কোয়ালিটি ভালো হলে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুঝুঁকি কমে আসবে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top