প্রিয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাটিতেই অন্তিম শয্যায় জাফরুল্লাহ

Untitled-1-2304141101.webp

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট .

স্বাধীন দেশে এক নতুন যুদ্ধে নেমেছিলেন তরুণ মুক্তিযোদ্ধা জাফরুল্লাহ। গড়ে তুলেছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে। ঢাকার বাইরের নিভৃত এক গ্রামে আস্তানা করেছিলেন। এক উজ্জ্বল বাতি হয়ে সেই গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র আলো ছড়িয়েছে সারা দেশে। অহর্নিশ কাজে কিংবা প্রাণ জুড়াতে যেখানে জাফরুল্লাহ নিয়মিত এসেছেন। সেখানে আবারও ফিরলেন জাফরুল্লাহ। তবে নিথর, প্রাণহীন। আগে যেখানে ফিরলে তার প্রাণস্পন্দনে উচ্ছ্বাস ছড়াতো। সেই প্রিয় মাটিতে জাফরুল্লাহর আগমনে সবার মধ্যে শোকের ছায়া। প্রিয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে জাফরুল্লাহ শায়িত হলেন চিরনিদ্রায়। এখানেই থাকবে তার নিস্পন্দ শরীর।

পরিবারের ইচ্ছা মেনেই তাকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে আনা হয়েছে। যদিও জাফরুল্লাহর চাওয়া ছিল, তার মরদেহ দেওয়া হবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণার কাজে। কিন্তু এমন মহাপ্রাণের শরীরে ছুরিকাঁচি বসাতে রাজি হননি চিকিৎসকরা। অগত্যা তাকে আনা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতেই সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসে জাফরুল্লাহর মরদেহ।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১০টার দিকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ’র মাঠে অস্থায়ীভাবে টাঙানো সামিয়ানার নিচে আনা হয় তার মরদেহবাহী গাড়ি। সেখানেই গাড়ির স্বচ্ছ কাচটি খোলা হয়। দূর থেকে দেখা মেলে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহের।

তারও আগে থেকেই শ্রদ্ধা জানাতে আগতরা ভিড় করেন গণস্বাস্থ্য প্রাঙ্গণে। সবার চোখে মুখে শোকের ছায়া। অ্যাপ্রোন গায়ে হবু ডাক্তাররা এসেছেন। জড়ো হয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, গণবিশ্ববিদ্যালয়সহ জাফরুল্লাহর অনুরাগী স্থানীয় বাসিন্দারাও। ৫০ বছরের সম্পর্ক বলে কথা!

ফিসফাস করে অনেকেই নিজেদের স্মৃতিচারণ করছেন। কেউ কেউ স্মরণ করছেন জাফরুল্লাহকে দেখার কথা। তার সঙ্গে সৃষ্টি হওয়া স্মৃতি। সেখানে শত শত অনুরাগীরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন তার জানাজায়।

শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে জাফরুল্লাহর মরদেহ নেওয়া হয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভেতরে কবরের জন্য নির্ধারিত স্থানে। পরিবার, সহকর্মী, অনুরাগীদের উপস্থিতিতে সেখানেই গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাটিতে শায়িত করা হয় তাকে।

দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত সমস্যার কারণে চিকিৎসাধীন ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও অন্যতম ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। পরে মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাত ১০টা ৪০ মিনিটে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ৮১ বছর বয়সে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top