নিজ কর্মস্থলে রোগী দেখতে পারবেন চিকিৎসকরা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

1674377982.327013883_486937903620876_4.jpg

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ……
সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা আগামী মার্চ মাস থেকে নিজ প্রতিষ্ঠানে রোগী দেখতে পারবেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। রোববার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে, স্বাস্থ্যখাতের কিছু জরুরি বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডাক্তাররা এখন থেকে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে প্রাইভেট প্র্যাক্টিস করতে পারবেন। ফলে বাইরে যেতে হবে না। আগামী মার্চ মাস থেকে এই প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাক্টিস শুরু হবে। আমরা কোনো ব্লক করব না। তবে কাজ করার জন্য তাগিদ দেব। একটা টাইম গাইড লাইন থাকবে। কোনো চিকিৎসকের প্রাইভেট প্র্যাক্টিস বন্ধ হবে না। নিজের প্রতিষ্ঠানে কাজ করার পর যদি সময় থাকে তাহলে তারা করতে পারবেন।

তিনি বলেন, যে প্রতিষ্ঠানে ডাক্তাররা কর্মরত আছেন, সেখানেই তারা প্রাইভেট রোগী দেখতে পারবেন। এতে বাইরের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন হাসপাতালে যেয়ে তাদের রোগী দেখতে হবে না। আমরা এই সুবিধাটা করে দিচ্ছি। কর্মস্থলে রোগী দেখার ক্ষেত্রে ডাক্তারদের কী কী সুবিধা-অসুবিধা আছে, তা নিয়ে আমরা বিশদ আলোচনা করেছি। ডাক্তাররা কোথায় বসবেন, তাদের ফি কত হবে এবং কারা কারা রোগী দেখবেন, কতক্ষণ দেখবেন- সব বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে। এ বিষয়ে টিম গঠন করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আশা করছি, স্বাধীনতার মাস মার্চ থেকে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস শুরু করতে পারব। পর্যায়ক্রমে আমাদের এ সংক্রান্ত পাইলট প্রজেক্ট বাস্তবায়ন শুরু হবে। এটি একেবারে ছোট না। পঞ্চাশটি উপজেলা, ২০টি জেলা ও পাঁচটি মেডিকেল কলেজ থাকবে। এনিয়ে আমরা যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছি। এর মাধ্যমে জনগণ আরেকটু ভালো স্বাস্থ্যসেবা পাবেন। কারণ হাসপাতালে এসে তারা চিকিৎসক পাবেন। যারা ভর্তি আছেন, তারাও চিকিৎসা পাবেন। একসঙ্গে অনেক ডাক্তার পাওয়া যাবে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষারও ব্যবস্থা থাকবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাইরে ডাক্তার দেখাতে যে খরচ হয়, তার চেয়ে কমে এই সেবা পাওয়া যাবে- এটি আমাদের উদ্যোগ। এ ক্ষেত্রে আমরা সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই।

এ সময়ে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সফলতার সঙ্গে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চোখের কর্নিয়া ও দুটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। যা সারা ইসলাম নামে একজন কিশোরী তার মায়ের সম্মতিক্রমে এই কিডনি দিয়ে গেছেন। যাদের শরীরে এই কিডনি ও কর্নিয়া স্থাপন করা হয়েছে, তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কাজটি হয়েছে, আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ, তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কিছুদিন আগে তারা লিভার প্রতিস্থাপন করেছেন। স্বাস্থ্যসেবায় যা মাইলফলক। আমরা আশা করছি বাংলাদেশ কিডনি, কর্নিয়া ও লিভার প্রতিস্থাপন করা হবে। আমরা সেই ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। যা দ্রুত গতিতে হচ্ছে। মানুষ বিদেশে যায় এসব চিকিৎসার জন্যই। যা আমরা বাংলাদেশে করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন, কিডনি ইনস্টিটিউটেও ট্রান্সপ্ল্যান্ট হচ্ছে। যা আরও জোরদার করা হবে। শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটেও কিডনি প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করছি। আমরা কিছুদিন আগে আমেরিকায় গিয়েছিলাম। সেখানকার নেবরাসিকা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। তারা আমাদের কিডনি ও লিভার প্রতিস্থাপনে সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ দেবেন। এছাড়া টিকা উৎপাদনে তারা আমাদের সহযোগিতা করবেন বলে একটি সমঝোতা সই করেছি। আমাদের প্রতিনিয়ত চেষ্টা আছে স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নের। মানুষকে যাতে বিদেশে যেতে না হয়, সেই চেষ্টা আমরা করছি।

এছাড়া মরণোত্তর যদি কেউ কিডনি দিয়ে যেতে পারেন, তখন তা অন্যদের জীবন রক্ষা করতে পারে। বাংলাদেশে এখনো সেই চর্চা হয়নি। হলে বহু মানুষের জীবন রক্ষা পাবে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top