শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় আরও ৩ জনের সাক্ষ্য

sat-20220719184457.webp

জেলা প্রতিনিধি………
আদালত প্রাঙ্গণে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় সাবেক বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের দুটি মামলার সাক্ষ্য দিয়েছেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামসহ তিনজন।

মঙ্গলবার (১৯ জুন) সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মণ্ডল কাঠগড়ায় থাকা বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৪০ জন আসামির উপস্থিতিতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। আগামী ১ আগস্ট পরবর্তী সাক্ষ্যর জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।

সাক্ষী দাতাদের মধ্যে কলারোয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ছাড়া অন্য দুইজন হলেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত হোসেন ও আনছার আলী।

সাতক্ষীরা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের দুটি মামলায় কারাগারে থাকা ৪০ জন আসামিকে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জেলা কারাগার থেকে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর কাঠগড়ায় হাজির করা হয়। এ মামলায় আরও নয়জন আসামি পলাতক আছেন। সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়।

তিনি আরও বলেন, এসময় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলার কলারোয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, জব্দ তালিকার সাক্ষী আনছার আলী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত হোসেনকে সাক্ষী হিসেবে হাজির করা হয়।

২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সকাল ১০টায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যান। সেখান থেকে যশোরে ফিরে যাওয়ার পথে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাস রাস্তার ওপরে রেখে তার গাড়ি বহরে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। হামলার অভিযোগ ওঠে তৎকালীন এমপি হাবিবসহ বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

হামলায় তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিন, জোবায়দুল হক রাসেল, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জাহান সাথী, শহিদুল হক জীবনসহ অনেকেই আহত হন। এ ঘটনায় থানা মামলা না নেওয়ায় ওই বছরের ২ সেপ্টেম্বর কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেমউদ্দিন বাদী হয়ে যুবদল নেতা আশরাফ হোসেন, আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০/৭৫ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। মামলায় ১৮ জনকে সাক্ষী করা হয়।

বিভিন্ন আইনি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ২০১৩ সালের ১৮ জুলাই হাইকোর্ট নিম্ন আদালতে মামলার কার্যক্রম নতুন করে শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। মুখ্য বিচারিক হাকিম নিতাই চন্দ্র সাহা ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। ২০১৫ সালের ১৭ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটি তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে এসটিসি ২০৭/১৫ ও এসটিসি ২০৮/১৫ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-দ্বিতীয় আদালতে বিচারাধীন।

অপর ১৫১/১৫ মামলাটিতে ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্রে উল্লিখিত বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে চার থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে সাজা দেন সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবির। এর মধ্যে আসামি মাহাফুজুর রহমান সাবু কারাগারে চিকিৎসাধীন মারা গেছেন এবং ৯ আসামি পলাতক আছেন। বাকি ৪০ আসামি কারাগারে আছেন। চলতি বছরের গত ১৬ জুন অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনের দুটি মামলায় চার্জ গঠন করা হয়।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top