ব্যুরো এডিটর …..
খুলনার বাসিন্দা মো. হিমেল হাওলাদার, বয়স ২৫। সাইকেল নিয়েই ঘুরে বেড়িয়েছেন পুরো বাংলাদেশ।
৬৪ জেলা ঘুরতে তার সময় লেগেছে ২০ দিন ৫ ঘণ্টা। তার এই যাত্রা খুলনার শিববাড়ির মোড় থেকে শুরু হয়ে জেলার সার্কিট হাউজে এসে শেষ হয়।
ধৈর্য, পরিশ্রম ও প্রবল ইচ্ছার সমন্বয় ঘটিয়ে এ কঠিন কাজটি সহজ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। তরুণ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হিমেল খুলনার খালিশপুরের মো. আব্দুল জলিলের ছেলে।
কেন দেশ ভ্রমণ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘শিশু শ্রম বন্ধ করি, সুন্দর এক আগামী গড়ি’- এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর সাইকেল ভ্রমণে বের হয়েছিলাম।
কোন জেলা থেকে কোন জেলায় গেছেন জানতে চাইলে হিমেল বলেন, আমার যাত্রা শুরু হয় ১৬ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার দিকে। খুলনা থেকে পর্যায়ক্রমে আমি সাতক্ষীরা, যশোর, নড়াইল, মাগুরা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, বগুড়া, জয়পুরহাট, গাইবান্ধা, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, শরিয়তপুর, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ি, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট হয়ে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে আমার ভ্রমণের ইতি টানি খুলনায়।
এই পুরো সাইকেল ভ্রমণে আমার সময় লেগেছে ২০ দিন ৫ ঘণ্টা। পুরোটা সময় জুড়ে আমি প্রতিটি জেলার সার্কিট হাউজগুলো পরিদর্শন করি। সবার কাছে একটি বার্তা (শিশুশ্রম বন্ধ করি, সুন্দর এক আগামী গড়ি) পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করি। এই বার্তার মাধ্যমে আমি সবাইকে শিশুশ্রমের ভয়াবহতা সম্পর্কে অবগত করি।
সাইকেল নিয়ে পরবর্তী পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সাইকেল দিয়ে ৬৪ জেলা ভ্রমণ শেষ করেছি। এখন বাংলাদেশের প্রত্যেকটি উপজেলা ভ্রমণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হিমেল বলেন, ৬৪ জেলায় ভ্রমণটা বেশ দুষ্কর হলেও আমাকে তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়নি। সব জায়গায়ই স্থানীয় ও সাইকেলিস্টদের সহযোগিতা পেয়েছি। ৬২ জেলায় সাইকেলিস্টরা তাদের বাসায় থাকার ব্যবস্থা করেছেন। দুই জেলা সাইকেলিস্ট না থাকায় স্থানীয়রা থাকার ব্যবস্থা করেছেন।
এ ভ্রমণে খুলনা সাইকেলিস্টস আমাকে সার্বিক সহযোগীতা করেছে। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে মো. মোস্তফা কামাল, মো. রেজাউল করিম, অথই-সহ সকল এডমিন ও খুলনা সাইকেলিস্টেসের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
খুলনা সাইকেলিস্টসের অ্যাডমিন মো. মোস্তফা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, প্রথম হিমেল ২১ দিনে সারা বাংলাদেশ তথা ৬৪ জেলা সাইক্লিং পরিভ্রমণ করেন। এত কম সময়ে সাইক্লিং এটা বাংলাদেশে খুবই বিরল।
তিনি আরও বলেন, ইতিপূর্বে হিমেল সাইকেলে ভোমরা থেকে তামাবিল ক্রস কান্ট্রি রাইড ও ৩৭ ঘণ্টায় ৪১২ কি.মি. সাইক্লিং করেছে। তিনি খুলনার সাইক্লিং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সামাজিক ও প্রচারাভিযান কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে থাকে। সেই সঙ্গে তিনি খুলনা বিভাগের সাইক্লিং প্রচারণার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।