গুম হওয়া পরিবারের দুর্দশা শুনে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

image-837896-1723615552.jpg

ডেস্ক রিপোর্ট: আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের শাসনামলে গুম ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের ফিরে পাওয়ার দাবি নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের সংগঠন মায়ের ডাক।

গুম ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের কাছে দুর্দশার বিবরণ শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ড. ইউনূস। তার নেতৃত্বাধীন নতুন অন্তবর্তীকালীন সরকার এসব গুম ও নিখোঁজের উদঘাটন করবে বলে তাদের আশ্বাস দেন তিনি।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, ‘এই (অন্তবর্তীকালীন) সরকার আপনারাই বানিয়েছেন। আপনাদের কারণে এ সরকারকে আসতে হয়েছে, আপনারা এই সরকারের জন্মদাত্রী। এই সরকার যদি আপনাদের বিষয়গুলো না দেখে, তাহলে

এই সরকারের দরকারটা কী? সরকার যদি এসব বিষয়ে কাজ না করে, তাহলে এই সরকারের সার্থকতা কী? যেভাবেই হোক এসবের সুরাহা করতে হবে, না হলে এ দায় থেকে এই সরকার মুক্তি পাবে না।’
গত কয়েক বছর ধরে গুমের শিকার ব্যক্তিদের সন্ধান চেয়ে রাজপথে কর্মসূচি পালন করে আসছে মায়ের ডাক।  তবে তাদের অভিযোগ নিয়ে খুব বেশি বিচলিত হতে দেখা যায়নি বিগত সরকারকে।  এমনকি বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীরা বলেন, নিখোঁজ ব্যক্তিরা স্বেচ্ছায় লুকিয়ে আছে।

ভুক্তভোগী পরিবারে সদস্যদের উদ্দেশে ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘আপনারা সাহসী কাজ করেছেন।  আপনারা যদি রাস্তায় না দাঁড়াতেন, তাহলে মানুষ জানতে পারতো না’।

মায়ের ডাকের আহ্বায়ক সানজিদা ইসলাম নিজেদের দুর্দশা তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের পরিবারের সদস্যদের গুম করেই ক্ষান্ত হয়নি, বিভিন্ন সময় নানান সংস্থার লোকজন অনেক পরিবারকে হয়রানি করেছে। এমনও হয়েছে সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়েছে যে আমাদের কেউ গুম নেই, তারা বেড়াতে গেছে।  অনেক পরিবারের এমন সন্তান আছে, যারা গর্ভে থাকার সময় তার বাবাকে নিয়ে গেছে। তারা জানে না তাদের বাবা বেঁচে আছে কি না। অনেক নারী জানেন না, তিনি বিধবা নাকি তার স্বামী বেঁচে আছে।’

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গুম ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান পেতে আশায় বুক বেঁধে আছে তাদের পরিবার।  কেউ কেউ ফিরলে সিংহভাগই এখনও নিখোঁজ।

প্রধান উপদেষ্টাকে ভুক্তভোগী এক নারী বলেন, ‘(৫ আগস্ট সরকার পতনের পর) যখন বিভিন্ন জায়গা থেকে গুম হওয়া ব্যক্তিদের ফিরে আসার তথ্য প্রকাশ হচ্ছিল, তখন আমাদের মনে আশার সঞ্চার হয়েছিল। আত্মীয়-স্বজনরা টেলিফোনে খোঁজ নিচ্ছিল। কী যে এক সময় কাটাচ্ছি, বলে বুঝাতে পারবো না।’

Share this post

scroll to top