আসেননি কোনো উপদেষ্টা, ‘আমাদের প্রয়োজন কী ফুরিয়ে গেছে?’

Untitled-1-673536f1dde7b.jpg

ডেস্ক রিপোর্ট:  সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবিতে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) অর্থাৎ পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আহতরা। বুধবার দুপুর দেড়টা থেকে সড়কে অবস্থান নিয়ে সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেন তারা। রাত সাড়ে ১২টায় এ প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত কোনো উপদেষ্টা না আসায় রাতেও সড়কে অবস্থান করছেন আহতরা।

এদিকে, হাসপাতালের সামনে সড়ক আটকে আহতরা অবস্থান করছেন- এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন জুলাই-আগস্ট স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। তিনি এসে অবস্থানরতদের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা চিকিৎসা বাবদ সরকারের পক্ষ থেকে এখনো তেমন কোনো সহায়তা পায়নি বলে তার সাথে কথা বলেননি। অন্যদিকে, রাতে সাড়ে ৯টার দিকে পঙ্গু হাসপাতালের সামনে অবস্থানরত আহতদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। সমস্যা সমাধানে উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, তিন মাস পর আমার ভাইয়েরা এখনো রাস্তায় আছেন, এটাই আমার জন্য সবচেয়ে লজ্জার। এই সমস্যার সমাধান কীভাবে করা যায় সে জন্য আমাকে একটু সময় দিন। তবে হাসনাতের কথার প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীরা চার উপদেষ্টার রাত ১০টার মধ্যে এসে তাদের সাথে কথা বলে সমস্যা সমাধান করলেই তারা সড়ক ছাড়বেন বলে জানান।

এর আগে, জুলাই–আগস্ট আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের দেখতে আজ সকালে পঙ্গু হাসপাতালে যান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কয়েকজন আহত ব্যক্তির খোঁজখবর নিয়ে হাসপাতালের পরিচালক ও চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় হাসপাতাল ভবনের সামনে তিনি চিকিৎসাধীন আহত ব্যক্তিদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। উপদেষ্টা সবার সঙ্গে দেখা করেননি অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেন আহতরা। এছাড়াও আহত এসব আন্দোলনকারীদের দাবি- জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সরকার গঠন করা হয়েছে। অথচ গত তিন মাসে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা তাদের দেখতে আসেননি। তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে কোনো খোঁজ-খবর নেননি। তিন মাস পর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা হাসপাতালে এলেও দুই-একজন ছাড়া আর কোনো আহত রোগীর সঙ্গে কথা না বলেনি।

আন্দোলনে আহতদের মধ্যে হাসপাতালের সামনে অবস্থানরতদের সমন্বয়ক সালমান হোসেন বলেন, দুপুরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এলে তার সঙ্গে থাকা একজন আমাদের এক ভাইকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। এটা আমাদের জন্য অপমানজনক। কেন আমাদের সঙ্গে এই আচরণ? তিন মাস হয়ে গেল কয়টা রোগী সুস্থ হতে পেরেছে? আমাদের সুচিকিৎসা হচ্ছে না।

ফাহিমুর রহমান নামে আহত আরেক আন্দোলনকারী বলেন, তিন মাস পর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আমাদের দেখতে এসেছেন। অথচ, জীবন দিয়ে আন্দোলন করে আমরা তাদের আসনে বসিয়েছি। আন্দোলন করে আহত হয়ে আমরা এখন কেমন আছি সেটি জিজ্ঞাস করার প্রয়োজনও মনে করলেন না তিনি। আমরা আমাদের অধিকার আদায়ে আজ পথে বসেছি। স্বাস্থ্য, তথ্য, সমাজকল্যাণ ও ক্রীড়া উপদেষ্টাকে পঙ্গু হাসপাতালের সামনে উপস্থিত হতে হবে। তারা না আসলে আমরা পথেই রাত যাপন করব। আমাদের প্রয়োজন কী ফুরিয়ে গেছে?

Share this post

scroll to top