ডেস্ক রিপোর্ট: ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুককে আটক করা হয়েছে। রোববার ভোর রাত পৌনে ৩টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পালানোর সময় তাকে আটক করা হয়।
জানা গেছে, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক যাওয়ার সময় বিমানবন্দরের বহির্গমন ইমিগ্রেশন কাউন্টারে যাওয়ার পর ইমিগ্রেশন অফিসার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরপর আর তাকে প্লেনে চড়তে দেওয়া হয়নি।
সূত্র জানায়, গোলাম ফারুক থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩৪০ নম্বর ফ্লাইটে ব্যাংকক যাচ্ছিলেন। তার সফরটি ছিল ব্যক্তিগত। তবে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে দেশের বাইরে যেতে দেয়নি। তিনি বর্তমানে ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে রয়েছেন। তাকে থানায় হস্তান্তর করা হবে নাকি বাড়ি ফিরে যাবেন এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
১৯৯১ সালে ১২তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন তিনি। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে দায়িত্ব শুরু করেন গোলাম ফারুক। ২০০৪ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার, ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর ছিলেন রংপুর রেঞ্জ ডিআইজির দায়িত্বে।
২০২২ সালের ২৯ অক্টোবর ডিএমপির ৩৫তম কমিশনার হিসেবে তিনি দায়িত্ব নেন এবং পুলিশ বাহিনীতে ৩২ বছর ৮ মাস ১০ দিন দায়িত্ব পালন শেষে ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর অবসরে যান।
চলতি বছরের ২৮ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ জমা পড়ে, যেখানে তার বিরুদ্ধে ৩ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়। অর্থাৎ কর্মজীবনে যখন যেখানে দায়িত্ব পালন করেছেন, সেখানেই প্রভাব খাটিয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন গোলাম ফারুক।
খন্দকার গোলাম ফারুক টাঙ্গাইলের ভুঞাপুর উপজেলার ঘাটান্দী এলাকার মৃত খন্দকার হায়দার আলীর ছেলে। বাংলাদেশের নাগরিক হলেও তার রয়েছে আমেরিকার গ্রিন কার্ড। গোলাম ফারুকের স্ত্রীর ভাই-বোনেরা আমেরিকার নাগরিক। তারা স্থায়ীভাবে সেখানেই বসবাস করেন।
দুদকে করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, গোলাম ফারুক নিকট আত্মীয়দের মাধ্যমে তার অবৈধ আয়ের আড়াই হাজার কোটি টাকা আমেরিকায় পাচার করেছেন।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার স্থাবর, অস্থাবর সম্পদ ও নগদ টাকা রয়েছে তার। কৌশলগত কারণে এসব সম্পদ ও নগদ টাকা নিকট আত্মীয়, স্বজনদের নামে এবং বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাখা হয়েছে।