সকল ইউএনও-ওসিকে বদলির নির্দেশ ইসির

Untitled-1-copy-1.jpg

খুলনার দর্পণ ডেস্ক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে দেশের সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ও পুলিশের সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) পর্যায়ক্রমে বদলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে সাংবিধানিক এই সংস্থা।
ইসি সূত্র জানায়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব বরাবর পাঠানো ইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সব ইউএনওকে পর্যায়ক্রমে বদলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। এ লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে যেসব ইউএনওর বর্তমান কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনের মেয়াদ এক বছরের বেশি হয়ে গেছে, তাঁদের অন্য জেলায় বদলির প্রস্তাব ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ইসিতে পাঠানো প্রয়োজন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চিঠিতে অনুরোধ করা হয়। এর আগে দেশের সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরও (ওসি) পর্যায়ক্রমে বদলির নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব বরাবর পাঠানো ইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) পর্যায়ক্রমে বদলি করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে যেসব থানার ওসির বর্তমান কর্মস্থলে ছয় মাসের বেশি চাকরিকাল সম্পন্ন হয়েছে, তাঁদের অন্য জায়গায় বদলির প্রস্তাব ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে পাঠানো প্রয়োজন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চিঠিতে অনুরোধ করা হয়।
এদিকে এতদিন ধরে ইসি বলে আসছিল, পুলিশ ও প্রশাসনের মাঠপর্যায়ে বড় রদবদল আনা হবে না। গত ২২ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনার মোঃ আলমগীর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মাঠ প্রশাসনে রদবদল করতে গিয়ে বিশৃঙ্খলা হলে তার দায় কে নেবে?
প্রশাসনে রদবদল করা হবে কি না-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল পাল্টা প্রশ্ন রেখেছিলেন, প্রশাসনে রদবদল কে কখন করেছিল? তিনি বলেন, তাঁরা নির্বাচনের স্বার্থে যেটা ভালো মনে করবেন, সেটা করবেন। তবে এখতিয়ারের বাইরে যাবেন না। এখতিয়ারের মধ্যে যা আছে, তা করবেন।
সিইসির এই বক্তব্যের চার দিনের মাথায় মাঠপর্যায়ে ইউএনও ও পুলিশের বড় রদবদল আনার সিদ্ধান্ত নিলো ইসি। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশের মহাপরিদর্শক ও জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের সঙ্গে বৈঠক করে ইসি। ওই দিন বিকেলে জনপ্রশাসন সচিবের সঙ্গেও বৈঠক হয়। এরপর পুলিশ ও প্রশাসনের মাঠপর্যায়ে রদবদলের চিঠি দেয়া হয়।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকেন পুলিশ ও প্রশাসনের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা। বিশেষ করে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) এবং পুলিশ সুপার (এসপি) ও থানার ওসিদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে ওসিরা সরাসরি মাঠে কাজ করেন। এখন সারা দেশে ছয় শতাধিক থানা আছে।
গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ভোট গ্রহণ হবে আগামী ৭ জানুয়ারি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।
খুলনা জেলায় ওসিদের কার্যকাল : খুলনা জেলার নয়টি থানার অফিসার ইনচার্জদের মধ্যে একমাত্র কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ ছয়মাসের কম সময়ে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া অন্যদের মধ্যে কেউ কেউ প্রায় ২ বছর সংশ্লিষ্ট থানায় অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। জেলার ডুমুরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সেখ কনি মিয়া ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে যোগদান করেন। এর আগে ২০১৬ সাল থেকে খুলনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশে দায়িত্ব পালন করেন ২০২০ সাল পর্যন্ত। ফুলতলা থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে মোঃ আব্দুল হক চলতি বছর ৩০ মার্চ যোগদান করেন। তেরখাদা থানার অফিসার হিসেবে সরদার মোশারফ হোসেন ২০২৩ সালের ১০ মে যোগদান করেন। রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে মোঃ শাহিন ১৪ মে যোগদান করেন। পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে ২০২৩ সালের ৩০ মার্চ দায়িত্ব পান মোঃ রফিকুল ইসলাম। এর আগে তিনি ২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দিঘলিয়া থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসেবে ২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি যোগদান করেন রিপন কুমার সরকার। বটিয়াঘাটার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে ২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি যোগদান করেন। দাকোপ থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে উজ্জ্বল কুমার দত্ত ২০২২ সালের ৩০ জুলাই যোগদান করেন।
এ বিষয়ে খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ সাঈদুর রহমান জানান, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বর্তমান কর্মস্থল থেকে অন্যত্র বদলির নির্দেশনাসংক্রান্ত কোন পত্র হাতে পাননি। এমন কোনো নির্দেশনা পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top