ডেস্ক রিপোর্ট: ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে সমুন্নত রাখা, গণহত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিতকরণ, ফ্যাসিবাদী শক্তির পুনরুত্থান রোধসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত পরিবর্তনের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ নামে নতুন প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা দিয়েছে জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।
সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকাল চারটায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা দেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, সম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মে জাবি শাখা থেকে পদত্যাগ করা সমন্বয়কবৃন্দ, আধিপত্যবাদ বিরোধী মঞ্চ, বিপ্লবী সাংস্কৃতিক মঞ্চ, জুলাই গণহত্যা বিচার নিশ্চিত পরিষদসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত উদ্যোগে নতুন এই প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হয়েছে।
নতুন প্ল্যাটফর্মের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে আহবায়ক হিসেবে আছেন তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু, সদস্য সচিব হিসেবে আছেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহমিদা ফাইজা ও যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে আছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রুদ্র মোহাম্মদ সফিউল্লাহ। এ ছাড়া প্ল্যাটফর্মের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করবেন মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান শাহরিয়ার।
সংবাদ সম্মেলনে প্ল্যাটফর্মের মুখপাত্র লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন। এতে উল্লেখ করা হয়, ‘একটি রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমাদের কাঙ্খিত দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পুরো জাতির বুকে একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন জাগ্রত হয়েছে। যেখানে কোন ফ্যাসিবাদী শক্তি, বৈষম্য ও নিপীড়ন থাকবেনা। থাকবে ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তা, জীবন ও জীবীকার নিরাপত্তা। এছাড়া বিশ^বিদ্যালয়গুলো হবে নিরাপদ ও উচ্চ শিক্ষার জন্য যথপোযুক্ত।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বর্তমানে দেখতে পাচ্ছি, অন্তবর্তীকালীন সরকার গণঅভ্যুত্থানের চেতনা লালন করতে পারছেনা। এ সংকট সরকারের আভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক উভয় অংশীজন কর্তৃক সৃষ্ট। ফ্যাসিবাদের দোসররা ভেতরে ও বাইরে থেকে সরকারকে এই গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে সমুন্নত করতে বাধা প্রদান করছে। পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের নিজেরও সদিচ্ছার অভাব ও গাফলতি এ সংকট আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে ফ্যাসিবাদী শক্তি পুনর্বাসিত হচ্ছে। নতুন বাংলাদেশে জন-মানুষের জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। যে সংস্কারগুলো আমরা আশা করছিলাম সেসব সাংবিধানিক-প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলোতে দীর্ঘসূত্রিতা দেখা দিচ্ছে।’
প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক আবদুর রশিদ জিতু বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানকে এবং এর চেতনাকে রক্ষা ও প্রতিষ্ঠা করার জরুরিয়ত সৃষ্টি হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মত ও পথের শিক্ষার্থীরা আলাদা আলাদাভাবে একই লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তাই বৃহত্তর পরিবর্তনের জন্য স্বাতন্ত্র বজায় রেখে সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরী। তারই অংশ হিসেবে জুলাই অভ্যত্থানের চেতনাকে রক্ষা ও প্রতিষ্ঠার জন্য ‘গণ অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ নামে আমরা একত্রিত হয়েছি। আমরা আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করব এবং একই সাথে তার লাগামও টেনে ধরব।’