উজানে বন্যার উন্নতি হলেও ভাটিতে অবনতি

sh-p-67037a729d818.jpg

ডেস্ক রিপোর্ট: অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের সীমান্তবর্তী উপজেলা ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদীতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যার পানি উজান থেকে নামতে শুরু করলেও ভাটি এলাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

একই সঙ্গে শেরপুর সদর উপজেলার গাজীরখামার, ধলা, বাজিতখিলা ও পাকুরিয়া ইউনিয়নের আংশিক এবং নকলা উপজেলার নকলা, উরফা, গণপদ্দী ও গৌরদ্বার ইউনিয়নের আংশিক এবং নকলা পৌরসভার আংশিক প্লাবিত হয়েছে।  এ বন্যার কারণে রোপা আমন ধান ও সবজিসহ সব ধরনের ফসলের এবং মাছ চাষিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কসহ গ্রামীণ রাস্তাঘাট ও বাঁধের ক্ষতি হয়েছে।

নকলা উপজেলার গণপদ্দি ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৬০)  রোববার বিকালে বন্যার পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তার লাশ উদ্ধার করে। নকলা থানার ওসি হাবিবুর রহমান রোববার রাত ১০টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  এনিয়ে বন্যার পানিতে ডুবে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ছয়জনে।

এর আগে বন্যার পানিতে ডুবে জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলাতেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে এবং একজন নারী নিখোঁজ রয়েছেন। অপরদিকে ঝিনাইগাতী উপজেলার সন্ধ্যাকুড়া এলাকায় বন্যার পানিতে ভেসে আসা অজ্ঞতনামা একজন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নারীর গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

জেলার পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান রোববার সন্ধ্যা জানান, ভোগাই নদীর পানি কমে নালিতাবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চেল্লাখালী নদীর পানি কমে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়লেও তা বিপৎসীমার ৫৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রণব কুমার কর্মকার বলেন, পাহাড়ি ঢলে ও বাঁধ ভেঙে জেলার ৬ হাজার ৫৬টি পুকুর ভেসে গেছে। এতে সব মাছ বের হয়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মাছ চাষিরা।

টাকার অঙ্কে প্রায় ৫৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ হুমায়ুন কবির জানান, এবার রোপা আমন আবাদ হয়েছে ৯৩ হাজার ৭০৮ হেক্টর জমিতে।  এর মধ্যে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ৩২ হাজার ১১৮ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান সম্পূর্ণ নিমজ্জিত এবং ১৪ হাজার ৬৭২ হেক্টর জমির রোপা আমন আংশিকভাবে নিমজ্জিত হয়েছে। জেলায় ২ হাজার ৬৩ হেক্টর জমির সবজি আবাদ করা হয়েছে। তার মধ্যে বন্যার পানিতে সম্পূর্ণ ৩৯৬ হেক্টর এবং ৬৬৩ হেক্টর আংশিকভাবে নিমজ্জিত হয়েছে। জেলায় ৬ লাখ ৯৩ হাজার ৬১৮টি বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে ৪ লাখ ৬৯ হাজার ১৯৪টি বস্তা।  বন্যায় মোট ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৩০ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Share this post

scroll to top