বিনোদন ডেস্ক : মীর সকালম্যান! তিনিই ছিলেন একসময় সানডে সাসপেন্সের মূল আকর্ষণ। এখন রেডিও ছাড়লেও তার গলার আওয়াজ কিন্তু স্পষ্ট! আরও বিশেষ করে বললে, তার প্রতিবাদের ভাষা। শিরদাঁড়াটা যে এখনো সোজা, তা প্রমাণ করেছেন আরজি করকাণ্ডে মুখ খুলে।
আরজি কর হাসপাতালে নারী চিকিৎসকের ওপর হওয়া মর্মান্তিক নির্যাতন নিয়ে প্রথম থেকেই সরব ছিলেন মীর আফসার আলি। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন— নারীদের কম নাইট ডিউটি করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েও।
মীর নারীদের ‘কম নাইট ডিউটি’ প্রসঙ্গে তুললে সোজা সাপটা উত্তরে বলেন— এখন আর মেয়েদের নাইট ডিউটি আবশ্যক নয়। আরজি করের নারী চিকিৎসকের মৃত্যুর পর অনেক নারীই ভয় পাবেন। অথবা বাড়ির লোক চাইবে না, তাদের মেয়েরা রাতে হাসপাতালে যাক। আর নারী নার্স কাজ করতে না পারার অর্থ হলো— আসবে পুরুষ নার্স।
তিনি বলেন, তাহলে নারী রোগীরা সুস্থ থাকবে তো? তারা যে কখনো পুরুষ নার্সের লালসার শিকার হবে না, তা কে নিশ্চিত করবে? সেই দায়িত্ব কে নেবে?
মীরের স্ত্রী সোমা ভট্টাচাৰ্য পেশায় একজন চিকিৎসক। তাই খুব কাছ থেকেই এ পেশাকে দেখেছেন এবং প্রতিনিয়ত দেখছেন। এর আগে আরজি করের পর চিকিৎসকদের প্রতিবাদ নিয়ে কথা বলতে গিয়েই মীর বলেছিলেন— চিকিৎসকরা মোটেই এত সহজে কাজে ফিরবেন না। কোথাও কেটে গেলে যেমন রক্ত আটকানোর জন্য চেপে ধরতে হয়, তেমনই এখানে যতক্ষণ না সঠিক বিচার আসছে, তারা নিজেদের প্রতিবাদ চালিয়ে যাবেন।
আরজি করকাণ্ডের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় রাতের কাজের জায়গায় মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ১৭টি পয়েন্ট তুলে ধরেন। আর সেখানে একটি হলো— যতটা সম্ভব নারীদের রাতের শিফট থেকে অব্যাহতি দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ফের প্রতিবাদে গলার আওয়াজ তুলেছেন জনগণ। বিশেষ করে আওয়াজ তুলেছেন বিনোদন জগতের তারকারা। তারা বলেছেন— কেন রাতের ওপর দখল থাকবে না মেয়েদের? কাজের জায়গায় নারীদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকার নিতে বাধ্য— সবাই একমত ছিলেন। এ তালিকায় মিমি চক্রবর্তী, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, পরমব্রত, শুভশ্রী, রচনা, কৌশিকীরাও রয়েছেন।
এর আগে কৌশিকীকে প্রতিবাদে বলতে শোনা যায়— ‘রাতে তাহলে গান গাইতে আসব না আমি?’ পরমব্রত বলেন, ‘এটা আমি মানতে পারছি না যে, নারীদের নাইট ডিউটি কম রাখব। তাহলে মানেটা কী হলো। রাত্রিবেলা নারীদের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব কার? এটা তো আমরা চাইছি। যাতে কেউ কারও অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়। সুরক্ষিত করার দায়িত্ব তো প্রশাসনের। বা যেখানে যিনি কাজ করবেন, শুধু হসপিটাল নয়, সেই কর্তৃপক্ষের। তাই বলে মেয়েরা নাইট ডিউটি করতে পারবেন না, ইয়ার্কি হচ্ছে নাকি?’
আর স্বস্তিকা লেখেন, ‘নাইট ডিউটি থেকে অব্যাহতি নয়; কর্মক্ষেত্রে নারী সুরক্ষা আইন চাই! মেয়েদের জন্য কোন গণ্ডি বা লক্ষণ রেখা টানবেন না! সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন আইনসভায় আইন প্রণয়ন করুন!’