মালয়েশিয়া থেকে এসেই আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলিতে মারা গেল সেকুল

image-836988-1723450191.jpg

ডেস্ক রিপোর্ট: মালয়েশিয়া থেকে ফিরে রাজধানীর উত্তরায় স্বজনদের বাড়িতে উঠেন সাইফুল ইসলাম সেকুল (৩২)। পরে ছোট বোনকে সঙ্গে নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন তিনি। কিন্তু একটি গুলিতে নিভে যায় তার জীবনপ্রদীপ।

গত ৫ আগস্ট ছোট বোন লিমা আক্তার রিমুকে সঙ্গে নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে অংশ নিলে বিকালে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন সেকুল। পরে তাকে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে ওইদিন রাতেই লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফিরেন যান তার বোন। পরের দিন ৬ আগস্ট সকালে গুজিরকোনা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে।

সাইফুল ইসলাম সেকুলের বাড়ি নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বিরিশিরি ইউনিয়নের বাড়ইকান্দি গ্রামে। তার বাবা মৃত সিকান্দার আলী মারা গেছেন দীর্ঘদিন আগেই। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে নিহত সেকুল দ্বিতীয়।

রোববার নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গেছেন মা। চেখের সামনে ভাইয়ের মৃত্যুর দৃশ্য কোনোভাবেই ভুলতে পারছেন না ছোট বোন। থেমে থেমে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন সবাই। সেকুলের এমন মৃত্যুতে হতবাক আত্মীয়স্বজনসহ পুরো এলাকার মানুষ।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সেকুলের বাবা সিকান্দার আলী মারা গেছেন দীর্ঘদিন আগে। বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেছিলেন তার বড় ভাই। এক বছর আগে জীবিকার তাগিদে প্রবাসী হিসেবে মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন সেকুল। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিজেও অংশ নিতে গত ৩ আগস্ট রাতে দেশে ফিরেছিলেন।

চোখে সামনেই গুলিতে ভাইয়ের মৃত্যু এ দৃশ্য কোনোভাবেই ভুলতে পারছেন না ছোট বোন লিমা আক্তার। সেই সময়কার দৃশ্যটা ভেবে ভেবে বারবার কান্নাকাটি করছেন। তিনি বলেন, আমার চোখের সামনেই আমার ভাইটা মারা গেলেন, আমি লাশ নিয়ে বাড়ি আইলাম। বিশ্বাস হয় না যে ভাই নাই।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা খুদেজা খাতুন বলেন, আমার ছেলে আমাকে ফোন দিয়ে বলেছিল ঢাকার অবস্থা খুবই ভয়াবহ। কিন্তু চিন্তা না করতে বলেছিল আমাকে। সে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবে কিন্তু এই বলে চিরতরে দুনিয়া থেকে চলে গেল। আমার ছেলের জন্য সবাই দোয়া করবেন।

Share this post

scroll to top