বাংলাদেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে অংশীদারিত্ব চুক্তির আলোচনা স্থগিত করেছে ইইউ

image-832618-1722482125.jpg

ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশের সঙ্গে একটি নতুন অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে আলোচনা স্থগিত করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আগামী সেপ্টেম্বরে প্রথম দফার ওই আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল। বুধবার ইইউ’র পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রয়টার্স।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘাতে দেড় শতাধিক নিহতের সমালোচনা করেছিল ইইউ। এর পরপরই জোটের পক্ষ থেকে এ পদক্ষেপ নেওয়া হলো। বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার হচ্ছে ইইউ। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের বাণিজ্যের ২০ দশমিক ৭ শতাংশ হয়েছিল ইইউ’র সঙ্গে। নতুন সহযোগিতা চুক্তিতে বাংলাদেশ ও ইইউ’র মধ্যে বাণিজ্য, অর্থনৈতিক ও উন্নয়নমূলক সম্পর্ক বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল। অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও সম্প্রসারণ ও বিকাশের লক্ষ্যে গত বছরের ২৫ অক্টোবর নতুন ইইউ-বাংলাদেশ অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন উপস্থিত ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পে ৪০ কোটি ইউরো অর্থায়নের লক্ষ্যে ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়। বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হ্রাসের লক্ষ্যগুলো অর্জন ও দেশের বিদ্যুৎ খাতের পরিবেশসম্মত টেকসই রূপান্তরের জন্য এই অর্থ খরচ করার কথা। এ ছাড়া আরও পাঁচটি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাবদ সাত কোটি ইউরোর চুক্তিও সই করা হয়। এ পাঁচটি ক্ষেত্র হলো শিক্ষা, শোভন কাজ, পরিবেশসম্মত নির্মাণশিল্প, ই-গভর্ন্যান্স ও জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা রোধ।

নতুন অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম দফার আলোচনা স্থগিত করার এ সিদ্ধান্ত এসেছে সাম্প্রতিক কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঘটা সহিংস ঘটনার প্রতি ইইউর সাড়া হিসাবে।

ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতি প্রধান জোসেপ বোরেল গত সপ্তাহে বাংলাদেশে ‘দেখামাত্র গুলি’ এবং ‘কর্তৃপক্ষের সংঘটিত’ হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের হত্যা, গণগ্রেফতার এবং সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির সমালোচনা করেছিলেন। বাংলাদেশ সরকার অবশ্য তাজা গুলি ছোড়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রবিষয়ক মুখপাত্র নাবিলা মাসরালি রয়টার্সকে একটি ই-মেইলে বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে সেপ্টেম্বরের জন্য পরিকল্পিত অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির প্রথম দফার আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে এবং পরবর্তী কোনো তারিখ এখনো ঠিক করা হয়নি।

বাংলাদেশ অবশ্য জানিয়েছে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময় সূচির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণে আলোচনাটি নভেম্বর পর্যন্ত বিলম্বিত হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব উত্তম কুমার কর্মকার বলেছেন, এই বিলম্বটি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের কারণে হয়েছিল এবং সাম্প্রতিক সহিংসতার আগে এটি ঠিক করা হয়েছিল। বাংলাদেশের এই প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি ইইউ।

Share this post

scroll to top