ছেলে আমার জানাজা দেবে সেজন্য হাফেজ বানিয়েছিলাম

image-831579-1722241471.jpg

ডেস্ক রিপোর্ট: ‘আমার মৃত্যুর পর জানাজায় ছেলে ইমামতি করবে সে জন্য তাকে হাফেজ বানিয়েছিলাম। একটি গুলি আমার একমাত্র সেই ছেলেকে কেড়ে নিল।’ এসব কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন নুরে আলম সিদ্দিকী রাকিবের (২২) মা নুরুন নাহার।

জানা যায়, রাকিব ময়মনসিংহের গৌরীপুরের রামগোপালপুর ইউনিয়নের দামগাঁও মধ্যপাড়ার আব্দুল হালিম শেখের ছেলে। ২০ জুলাই কলতাপাড়া বাজারে কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনজন। তাদের মধ্যে একজন রাকিব। রাকিবের চাচাতো ভাই আব্দুল মালেক জানান, তিনি অত্যন্ত মেধাবী ও মধুকণ্ঠের ছিলেন। বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে সুনাম অর্জন করেন। ইসলামি সংগীতও পরিবেশন করতেন। রাকিব ২০২২ সালে ঈশ্বরগঞ্জ মরিচারচর এমদাদুল উলুম নুরানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা থেকে হাফেজ পাশ করেন। শিক্ষকতা করতেন নিজ গ্রামে তার বাবার প্রতিষ্ঠিত তালিমুল কুরআন মহিলা মাদ্রাসায়। শিক্ষকতার পাশাপাশি ঈশ্বরগঞ্জের ভাসা গফুলনগরে ভাসা আতহারিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে লেখাপড়াও করছিলেন। রাকিব এ বছর ১২ জানুয়ারি বিয়ে করেন। তার স্ত্রী বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা।

রোববার বিকালে বাড়িতে দেখা যায় সনসান নীরবতা। কবরে চিরনিন্দ্রায় শায়িত রাকিব। তার অসুস্থ স্ত্রী সাদিয়া আক্তারকে চিকিৎসার জন্য রাকিবের বাবা ময়মনসিংহে নিয়ে গেছেন।

রাকিবের মা আরও বলেন, আমার ছেলে কখনো তো কারও সঙ্গে ঝগড়া করেনি। তাকে কেন মেরে ফেলা হলো?

উল্লেখ্য, গৌরীপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কলতাপাড়া বাজারে নিহত অপর দুজন হলেন ডৌহাখলা ইউনিয়নের চুড়ালী গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে বিপ্লব (১৯) ও মইলাকান্দা কাউরাট গ্রামের আনোয়ার উদ্দিনের (আইন উদ্দিন) ছেলে জুবায়ের (২১)।

Share this post

scroll to top