খুলনার দর্পণ ডেস্ক : নোবেলজয়ী ড. ইউনূসকে হয়রানি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে মার্কিন পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের ১২ সদস্যের চিঠিতে বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলা দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে ওই চিঠির বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, কোনো দেশের বিচার প্রক্রিয়া না জেনে কোনো ধরনের মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া দেয়া সঠিক নয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই সংক্রান্ত চিঠি দেয়া সমুচিত নয়। তিনি বিচার বিভাগের কেউ নন। প্রকাশ্য আদালতে ড. ইউনূসের মামলার বিচার হয়েছে। এটা নিয়ে কারও কোনো বক্তব্য বা প্রতিক্রিয়া থাকলে বাতিল করার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে তারা তাদের বক্তব্য দিতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, বহির্বিশ্বের যেসব ব্যক্তি বা সংস্থা এ বিষয়ে কথা বলছেন, তারা বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা নিয়ে কিছু জানেন না অথবা কেউ তাদের প্রভাবিত করে এসব করাচ্ছে।
এর আগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হয়রানি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ওই চিঠি দেন মার্কিন পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের ১২ সদস্যের। তারা হলেন মেজরিটি হুইপ ও সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটির চেয়ার ডিক ডারবিন, টড ইয়ং, টিম কাইন, ড্যান সুলিভান, জেফরে এ মার্কলে, জিন শাহিন, এডওয়ার্ড মার্কি, শেরোড ব্রাউন, পিটার ওয়েলশ, শেলডন হোয়াইটহাউস, রন ওয়াইডেন ও কোরি এ বুকার। এ প্রসঙ্গে গত সোমবার সিনেটর ডিক ডারবিন একটি টুইট করেন। ওই চিঠির ওপর তারিখ লেখা আছে ২২ জানুয়ারি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ধারাবাহিক হয়রানি এবং আরও বিস্তৃতভাবে বলতে গেলে, সরকারের সমালোচকদের বিরুদ্ধে যেভাবে আইন ও বিচারব্যবস্থার অপব্যবহার করা হচ্ছে, তা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আমরা আপনার কাছে লিখছি।
এক দশকের বেশি সময় ধরে অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে দেড় শতাধিক ভিত্তিহীন মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো মানবাধিকার সংস্থাগুলো তার বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়ায় অনিয়মের উল্লেখ করেছে। এগুলোর মধ্যে সম্প্রতি দেশের শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের মামলায় মুহাম্মদ ইউনূসের ছয় মাসের কারাদ-ের রায়ের মামলাও রয়েছে। খ্যাতনামা এই সংস্থাগুলো বলেছে, বিচারপ্রক্রিয়ার গতি এবং বারবার ফৌজদারি কার্যধারার ব্যবহার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিচারব্যবস্থার অপব্যবহারের ইঙ্গিত দেয়। মুহাম্মদ ইউনূসকে বারবার ও দীর্ঘ সময় ধরে হয়রানি বাংলাদেশে ক্রমে নিয়ন্ত্রণ বাড়তে থাকা পরিবেশে সুশীল সমাজের অনেক সদস্যকে যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তা তুলে ধরে।