খুলনার দর্পণ ডেস্ক : ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয়ার জন্য পরিকল্পনা করে বিএনপির নেতারা ভিডিও কনফারেন্স করে ভার্চ্যুয়াল একটি মিটিং হয়। ১৭ মিনিটের ওই মিটিংয়ে ট্রেনে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একজনকে দায়িত্ব দেয়া হয় আগুন দেয়ার জন্য। সে অনুযায়ী শুক্রবার রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন দেয়া হয়। অগ্নিকা-ের ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে ঢাকা রেলওয়ে থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও দ-বিধির ৩০২ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে শনিবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা রেলওয়ে পুলিশের এসপি আনোয়ার হোসেন জানান, গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দিয়ে নাশকতা ও যাত্রী হত্যার ঘটনায় ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) এস এম নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ঢাকা রেলওয়ে থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও দ-বিধির ৩০২ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন।
ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গ্রেপ্তার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবীকে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল ৬ জানুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু এই আদেশ দেন।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গতকাল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামি মোহাম্মদ নবী উল্লাহকে হাজির করে সাত দিন রিমান্ড আবেদন করেন ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল আলম। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নবীর আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করে তিন দিন রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেন।
গতকাল ৬ জানুয়ারি ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান বলেন, বিএনপি নেতা নবীউল্ল্যাহ নবীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তারের পর ট্রেনে আগুন দেয়ার পরিকল্পনার বিষয়ে ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানান যুবদলনেতা কাজী মনসুর। জিজ্ঞাসাবাদে মনসুরের দেয়া বক্তব্যের একটি ভিডিও গণমাধ্যমকে দিয়েছে ডিবি পুলিশ। সেখানে ট্রেনে আগুন দেয়ার পরিকল্পনার বর্ণনা রয়েছে।
ডিবি প্রধান বলেন, ওই কনফারেন্সের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম সভাপতিত্ব করেন। কনফারেন্সে প্রথমে আসেন মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনাম। এরপর আসেন সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফফার, ইকবাল হোসেন বাবলু, একজন দপ্তর সম্পাদক ও কাজী মনসুর। তারা ভিডিও কনফারেন্সে এসে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে বিশেষ করে নরসিংদীর কাছে সুবিধাজনক স্থানে অগ্নিসংযোগ করার কথা বলেন। আরেকটি স্থানও তারা নির্ধারণ করেন। কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ লাইনের আপ-ডাউনে সুবিধাজনক স্থানে। সেখানে যাত্রীবাহি ট্রেনে আগুন লাগিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরিকল্পনা করেন তারা।
ডিবি প্রধান আরও বলেন, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনামের সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়ালি একটি মিটিং হয়। ১৭ মিনিটের ওই মিটিংয়ে ট্রেনে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একজনকে দায়িত্ব দেয়া হয় আগুন দেয়ার জন্য। সে অনুযায়ী শুক্রবার রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন দেয়া হয়।