ড. ইউনূসের ৬ মাসের কারাদন্ড

Untitled-8-copy-1.jpg

খুলনার দর্পণ ডেস্ক : শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাসের কারাদ- দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে চারজনকে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। পরে আপিলের শর্তে ড. ইউনূসসহ চারজনকে এক মাসের জামিন দিয়েছেন আদালত।
গতকাল ১ জানুয়ারি নতুন বছরের প্রথমদিনে রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনে তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা ৮৪ পৃষ্ঠার রায় পড়া শেষে এ আদেশ দেন। রায় শুনতে আদালতে অনেক বিশিষ্ট নাগরিক উপস্থিত ছিলেন।
ড. ইউনূস ছাড়াও এই মামলায় আসামি করা হয় গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মোঃ আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মোঃ শাহজাহানের বিরুদ্ধে। ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।
দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে ড. ইউনূস ঢাকার প্রথম শ্রম আদালতে হাজির হন। সে সময় আদালতের এজলাসের পেছনের চেয়ারে বসে ছিলেন। তাকে ঘিরে রেখেছিলেন আইনজীবীরা। এ সময় তিনি কারও সাথে কথা বলেননি। এ ছাড়া রায় শোনার জন্য অনেক বিশিষ্ট নাগরিক আদালতের এজলাসে হাজির হন। বিচারক দুপুর ২টার পরে আদালতের এজলাস গ্রহণ করেন। এরপরে বিচারক রায় পড়া শুরু করেন। বিচারক রায় পড়ার সময় বলেন, ৮৪ পৃষ্ঠার রায় সব পড়া সম্ভব নয়। আজকে নোবেলবিজয়ী ড. ইউনূসের বিচার হচ্ছে না, এখানে বিচার করা হচ্ছে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান হিসেবে।
বিচারক এসময় আরও বলেন, আমি শুধু জিস্টটা পড়ে শোনাচ্ছি।
বিচারক তার পর্যবেক্ষণে বলেন, ড. ইউনূসের মামলায় চার জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলার বাদী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান কর্তৃক মামলা দায়েরে কোন ত্রুটি হয়নি। মামলা দায়েরে কোন বিলম্ব হয়নি। তিনি যথাসময়ে এই মামলা দায়ের করেছেন।
বিচারক রায়ে আরও বলেন, এ মামলায় আরও পরিচালক রয়েছেন, যাদের আসামি করা হয়নি; এমন বক্তব্য আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেছেন। আইনজীবী আরও বলেন, শুধু ড. ইউনূসের ঘনিষ্ঠজনদের এ মামলায় আসামি করা হয়েছে, যা সত্য নয়। কারণ বার্ডেন অফ প্রুফ (প্রমাণের দায়িত্ব) আসামির ওপর বর্তায়। উপরোক্ত কারণে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে শ্রম আইন লঙ্ঘন হয়েছে।
এরপরে বিচারক ড. ইঊনূস, গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মোঃ আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও পরিচালক মোঃ শাহজাহান শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ১০ দিন বিনাশ্রম কারাদ- ও একইসঙ্গে ৩০৭ ধারায় ২৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদ- দিয়েছেন।
এদিকে, রায়ের পরে ড. ইউনূসের আইনজীবী আপিল শর্তে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক আপিলের শর্তে ১ মাসের জামিন মঞ্জুর করেন। এ সময় জামিনের আবেদনের কপি অপরপক্ষের আইনজীবী খুরশিদ আলম চাইলে ড. ইউনূসের আইনজীবী বলেন, রায় হয়ে গেছে এখন আপনার এটা দেখার এখতিয়ার নেই। এখন আপনি আর এটার পার্ট না।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top