বিজয়ের দিনে ঐতিহাসিক বিজয় বাংলাদেশের মেয়েদের

Untitled-4-copy-11.jpg

ক্রীড়া প্রতিবেদক : ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস। বিজয়ের এমন দিনেই ঐতিহাসিক এক বিজয় উপহার দিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে জিতলো প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ। প্রোটিয়া নারীদের গুঁড়িয়ে দিয়ে জয় ছিনিয়ে আনলো ১১৯ রানের বিশাল ব্যবধানে।
বাফেলো পার্ক স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে মুর্শিদা খাতুনের ১০০ বলে অপরাজিত ৯১ রানে ভর করে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পুঁজির রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩ উইকেটে ২৫০ রান তোলে টাইগ্রেসরা। ব্যাট করতে নামা দলের পাঁচ ব্যাটারের রানই দুই অঙ্ক ছুঁয়েছে এদিন। পরে বোলিংয়ে নেমে প্রোটিয়া ব্যাটারদের নিয়ে ছেলেখেলায় মাতলেন নাহিদা-ফাহিমারা। বাংলাদেশের বোলিং তোপে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং অর্ডার। শেষ পর্যন্ত স্বাগতিকরা অলআউট হয় মাত্র ১৩১ রানে। দারুণ এই জয়ে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকলো জ্যোতিরা।
এদিন টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ম্যাচের শুরু থেকেই দারুণ খেলেছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। দুই ওপেনার শামিমা সুলতানা আর ফারজানা হক মিলে উদ্বোধনী জুটিতে যোগ করেন ৬৬ রান। আউট হওয়ার আগে শামিমা ৪৮ বলে করেন ৩৪ রান। শামিমার আউটের পর রান তোলার গতি খানিকটা কমে আসে বাংলাদেশের। শুরুর দিকে মুরশিদা যেমন খেলেছেন খানিকটা ধীরগতিতে, তেমনি ফারজানাও খেলেছেন বেশকিছু ডট বল। ফারজানা ৩৫ করে আউট হলে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। এসেই রানের গতি বাড়ানোর দিকে নজর দেন টাইগ্রেস অধিনায়ক। তাতে সফলও হয়েছেন তিনি। মুর্শিদার সঙ্গে ৮০ রানের জুটিতে জ্যোতি খেলেছেন ৪৮ বলে ৩৮ রানের ইনিংস। শেষদিকে স্বর্ণা এসে রানের গতি বাড়িয়েছেন আরও অনেকটা। ২৮ বলে ২৭ রান করে দলীয় স্কোর ২৫০ পর্যন্ত টেনে নিয়েছেন তিনি। তবে বাংলাদেশ ইনিংসের হাইলাইট হয়ে থাকবে মুর্শিদার ইনিংস। দলের রান বাড়ানোর জন্য বারবার স্ট্রাইক ছেড়ে দিয়েছেন স্বর্ণার কাছে। ব্যক্তিগত ইনিংসের চেয়ে দলের রান সংখ্যাই বাড়াতে মনোযোগী ছিলেন ওয়ানডাউনে নামা এই ক্রিকেটার। শেষ পর্যন্ত মুর্শিদা ১২ চারে ১০০ বল খেলে অপরাজিত থেকেছেন ৯১ রানে। সেঞ্চুরি হাতছাড়া হলেও ব্যক্তিগত রেকর্ড ঠিকই গড়েছেন মুর্শিদা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ এখন মুর্শিদার। এর আগে সর্বোচ্চ ৭৪ ছিল শারমিন আক্তারের।
বাফেলো পার্কে ওয়ানডেতে গড় পুঁজি আড়াইশোরও নিচে। এমন পরিসংখ্যান কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছিল বাংলাদেশের ২৫০ রানের পুঁজিকে। টাইগ্রেসদের স্বস্তি আরও বাড়ান সুলতানা খাতুন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে আক্রমণে এসেই ফেরান প্রোটিয়া অধিনায়ক লরা উলভার্টকে। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৫ রান। লরার বিদায়ের পর আর কোনো রান যোগ করার আগেই আরও একটি উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ওপেনার তাজমিন ব্রিটসকে ফেরান মারুফা আক্তার। এরপর অ্যানিকে বখ ও সুনে লুস মিলে কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা চালান। তাদের জুটিতে আসে ৪১ রান। কিন্তু তারপরেই আবার নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে তাকে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত ৩৬.৩ ওভারে ১৩১ রানে গিয়ে সবকটি উইকেটের পতন ঘটে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন এলিজ-মারি মার্কস। ৩১ রান করেন সুনে লুস। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন নাহিদা আক্তার। এ ছাড়া দুটি করে উইকেট নিয়েছেন ফাহিমা, রাবেয়া ও সুলতানা খাতুন। এক উইকেট মারুফার। অবিতর্কিতভাবে ম্যাচসেরা হয়েছেন মুর্শিদা।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top