টেস্ট সিরিজ ড্র; তাইজুল সেরা

Untitled-1-copy-5.jpg

খুলনার দর্পণ ডেস্ক : পারল না বাংলাদেশ। বোলাররা চেষ্টার কমতি রাখেননি। কিন্তু ব্যাটাররা ভালো পুঁজি এনে দিতে পারেননি। ১৩৭ রানের ছোট লক্ষ্য দিয়েও এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, কিউইদের বুঝি হারিয়েই দিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতার পরেও আশার বাতিঘর হয়ে ছিলেন বোলাররা। ৬৯ রানে ৬ উইকেটে হারিয়ে নিউজিল্যান্ড অনেকটাই খাদের কিনারে চলে গিয়েছিল। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে সপ্তম উইকেটে ৭৭ বলে ৭০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে কিউইদের ৪ উইকেটের জয় এনে দেন গ্লেন ফিলিপস ও মিচেল স্যান্টনার।
গতকাল ঢাকা টেস্টের চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেয়া ১৩৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৩৯.৪ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে ১৩৯ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুই ম্যাচ সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ হয়। এর আগে বাংলাদেশ তাদের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ করে ১৪৪ রান তুলে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ১৭২ রানের জবাবে নিউজিল্যান্ড তাদের প্রথম ইনিংসে ১৮০ রান তুলে ৮ রানের লিড নেয়। কিউই প্রথম ইনিংসে অনবদ্য ৮৭ রান করা গ্লেন ফিলিপস দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ৪০ রান করে হন ম্যাচসেরা। দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে সর্বোচ্চ ১৫ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা টাইগার স্পিনার তাইজুল ইসলাম।
গতকাল অল্প রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। প্রথম আঘাত হানেন পেসার শরিফুল ইসলাম। ডেভন কনওয়েকে (২) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে বাংলাদেশকে শুভসূচনা এনে দেন তিনি। ৫ রানে কিউইরা হারায় কনওয়েকে। দলীয় ২৪ রানে কেইন উইলিয়ামসনকে সাজঘরের পথ দেখান তাইজুল ইসলাম। ১১ রান করে তাইজুলের বলে স্ট্যাম্পড হন উইলিয়ামসন। সতর্ক কিউইরা দেখেশুনে খেলে এরপর। বেশিক্ষণ অবশ্য সেই প্রতিরোধ টেকেনি। হেনরি নিকোলসকে (৩) লেগ বিফোর করে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৩৩ রানে ৩ উইকেট হারানো কিউইদের হাল ধরার চেষ্টা করেন টম লাথাম ও ডেরিল মিচেল। লাথামকে স্লিপে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ বানিয়ে ফেরান মিরাজ। লাথামের ব্যাট থেকে আসে ২৬ রান। চতুর্থ উইকেটের পুনরাবৃত্তিই ঘটে ষষ্ঠ উইকেটেও। এবারও স্লিপে শান্তর ক্যাচ, মিরাজের বলে। এবার শিকার ১৯ রান করা মিচেল। মাঝে পঞ্চম উইকেট তুলে নেন তাইজুল। টম ব্লান্ডেলকে সোহানের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান ক্রিজে থিতু হওয়ার আগেই। ৬৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে কিউইরা খেলেছে আগ্রাসী ঢংয়ে। ফিলিপস ও স্যান্টনার মিলে বাকি সময় আর কোনো অঘটন ঘটতে দেননি। দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তারা। বাংলাদেশের পক্ষে মিরাজ ৩টি ও তাইজুল নেন ২ উইকেট।
এর আগে দিনের শুরুতে ২ উইকেটে ৩৮ রান নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশ প্রথম হারায় মমিনুল হককে। দলীয় ৭১ রানে এজাজ প্যাটেলের বলে লেগ বিফোর হন মমিনুল। তার ব্যাট থেকে আসে ১০ রান। প্রথম ইনিংসে বাচ্চাদের মতো ভুল করে আউট হওয়া মুশফিকুর রহিম দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ ব্যাট হাতে। ৯ রান করে মিচেল স্যান্টনারের বলে ডেরিল মিচেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। দলের বিপদ বাড়ে পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে শাহাদাত হোসেন দিপু আউট হলে। এবারও শিকারি স্যান্টনার। ৪ রান করে লেগ বিফোর হন দিপু। মেহেদী হাসান মিরাজ ফেরেন ৩ রান করে। এজাজ প্যাটেলের বলে স্যান্টনারের ক্যাচে পরিণত হন তিনি। নুরুল হাসান সোহান ক্রিজে এসেই হতে পারতেন লেগ বিফোর। রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেলেও এক বলের বেশি টিকতে পারেননি। কোনো রান না করেই ফেরেন প্যাটেলের বলে লেগ বিফোর হয়েই। বাংলাদেশের পক্ষে একপ্রান্তে একা লড়াই চালিয়ে যান ওপেনার জাকির হাসান। ৮৬ বলে ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তার ব্যাটেই বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখছিল সংগ্রহ বড় করার। শেষ পর্যন্ত সেটি হয়নি। মিচেলের ক্যাচ বানিয়ে জাকিরকে সাজঘরে পাঠান প্যাটেল। নবম ব্যাটার হিসেবে তিনি আউট হন ৬ চার ১ ছক্কা মেরে। তাকে ফিরিয়ে ইনিংসে ফাইফার নেন প্যাটেল। শেষ ব্যাটার হিসেবে শরিফুল ইসলামকে স্ট্যাম্পড করে ইনিংসে নিজের ষষ্ঠ শিকার করেন প্যাটেল। বাংলাদেশ অলআউট হয় দেড়শো ছোঁয়ার আগেই। কিউইদের পক্ষে ৫৭ রানে ৬ উইকেট পান প্যাটেল। ৩ উইকেট নেন স্যান্টনার।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top