মাশরাফির সাথে এবার সাকিব

Untitled-7-copy-11.jpg

খুলনার দর্পণ ডেস্ক : ক্রিকেটার থেকে রাজনীতির মঞ্চে এসেছেন অনেকেই। শ্রীলঙ্কায় সনাৎ জয়সুরিয়া ক্রিকেটার থেকে মন্ত্রী হয়েছেন। পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জেতা অধিনায়ক ইমরান খান তো নিজেই প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশ শাসন করেছেন। ভারতেও অনেক ক্রিকেটার রাজনীতিতে এসে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য হয়েছে। ক্রিকেট আর রাজনীতি নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সখ্যতাও কম না। পথটা দেখিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়। তারপর মাশরাফি বিন মর্তুজার পথ বেয়ে এখন সাকিব আল হাসান।
এর আগে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মতুর্জা গত নির্বাচনে নড়াইল-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়া, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় মানিকগঞ্জের একটি আসন থেকে আওয়ামী লীগের পরপর দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য আছেন। যদিও এবার তিনি মনোনয়ন পাননি। তবে মাশরাফিকে এবারও মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। বিগত ১৭ বছর ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেটে পোস্টারবয় হয়ে থাকা সাকিবকে এখন হাঁটতে দেখা যাবে দুর্জয়-মাশরাফির দেখানো পথেই। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন টাইগার অধিনায়ক। নিজের জন্মস্থান মাগুরা-১ আসনে নির্বাচনে লড়বেন সাকিব। নির্বাচনে অংশ নিতে মাগুরা ১ ও ২ আসন ছাড়াও ঢাকা-১০ আসনে দলীয় আবেদন ফরম নিয়েছিলেন সাকিব। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেন সাকিব। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলে এ বৈঠক। বৈঠক শেষে সাকিবের নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান রাজনীতি করবেন। তিনি জনগণের সেবা করবেন।’ এরপরেই মূলত পরিষ্কার হয়ে যায় সাকিবের মনোনয়ন। গতকাল প্রার্থী মনোনয়নের ঘোষণায় শেষ পর্যন্ত সেই গুঞ্জনেরই সত্যতা মিললো। মনোনয়ন ঘোষণা দেয়ার দিন গতকালও গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন সাকিব।
গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য হন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সহকারী একান্ত সচিব সাইফুজ্জামান শিখর। যার পিতা আসাদুজ্জামান এই আসন থেকে চারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। শ্রীপুর ও মাগুরা সদর নিয়ে গঠিত এ আসনে নৌকা নিয়ে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সাকিব। সাকিব বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ক্রিকেটারদের একজন। তিনি দীর্ঘকাল ধরে বিশ^সেরা অলরাউন্ডার। মাগুরার মুন্সিগঞ্জের বারবাজার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সাকিব। তার বাবা নাসিরউদ্দিন হাসান এবং মাতা শাহিদা আক্তার। সাকিব ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটে আগ্রহী ছিলেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে তার অভিষেক হয়।
এই মুহূর্তে ক্রিকেট দলের তিন ফরম্যাটেই অধিনায়ক হিসেবে আছেন সাকিব আল হাসান। ওয়ানডে ফরম্যাটে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেয়ার কথা ছিল। বিশ্বকাপের আগে এক সাক্ষাৎকারে এমন কথাই জানিয়েছিলেন সাকিব। তবে এখন পর্যন্ত এই ফরম্যাটেও তাকে অধিনায়ক রেখে দিয়েছে বিসিবি। ২২ গজের অধিনায়কের এবার রাজনীতির মাঠে নিজের কারিশমা দেখানোর পালা। সাকিব আল হাসানের রাজনীতির ক্যারিয়ার নিয়ে বেশ আগে থেকেই গুঞ্জন ছিল। ২০১৮ নির্বাচনের আগেও তার মনোনয়ন এবং প্রার্থীতা নিয়ে গুঞ্জন উঠেছিল। সেবার বাংলাদেশের সেই সময়ের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাকে নড়াইল-২ আসনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। মাশরাফির পথ ধরে এবার সাকিব আল হাসানও নিজের অধিনায়কত্ব থাকাকালে সংসদ নির্বাচনে নামতে চলেছেন।
এদিকে সাকিবের রাজনীতিতে নাম লেখানো এক অর্থে তার ক্যারিয়ারেরই শেষের ইঙ্গিত দিয়ে রাখলো। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পরে মাশরাফিকে খুব বেশিদিন বাংলাদেশের জার্সিতে দেখা যায়নি। ২০১৯ বিশ্বকাপেও তার পারফরম্যান্স নিয়ে ভক্তদের মাঝে ছিল অসন্তোষ। সাকিবও অনেকটা সেই পথেই হাঁটছেন। আগেই বলে রেখেছিলেন ২০২৫ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়ে নিজের ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন তিনি। সেই হিসেবটাও হয়ত মিলিয়ে নেয়ার সময় এসেছে এবারে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top