বন বিভাগে হামলার কথা স্বীকার করলো জেলেরা

Untitled-2-copy-10.jpg

খুলনার দর্পণ ডেস্ক : নিয়ম বহির্ভূতভাবে কাঁকড়া আহরণ ও পরিবহণ অভিযোগের দায়ে আটকের পর মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন জেলেরা। গত ২৩ নভেম্বর বিকেলে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জ কার্যালয় এ মুচলেকা দেন জেলেরা।
এর আগে বুধবার (২১ নভেম্বর) মঙ্গলবার ভোরে নিয়ম বহির্ভূতভাবে কাঁকড়া আহরণ ও পরিবহণ অভিযোগের দায়ে একটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার ও ৫টি নৌকায় থাকা ৮০ ক্যারেট কাঁকড়াসহ ২৫ জেলেকে আটক করে বন বিভাগ। পরে রাত সাড়ে ৭টার দিকে সুন্দরবনের পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জ অফিসে হামলা করে ১৯ জেলেকে ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে ইসমাইল হোসেন ওরফে লিটন গাজীর বিরুদ্ধে।
এদিকে গত বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে মোংলা প্রেসক্লাবে জেলেদের মারধরসহ আহরিত ২০ লাখ টাকার কাঁকড়া ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ তুলে বনরক্ষীদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলেরা। একই সঙ্গে চাঁদা চাওয়া, নদীতে জেলেদের নৌকায় হামলা ভাঙচুরসহ ৬ জেলেকে আটক করা এবং এ ঘটনায় ২ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন জেলেরা।
মুচলেকা দেয়ার সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসমাইল গাজী লিটন বলেন, বন বিভাগ আমাদের কোনো প্রকার মারধোর করেনি, চাঁদাও চায়নি এবং কাঁকড়াও ছিনিয়ে নেয়নি, তারা অবৈধ ভেবে কাঁকড়া আটক করেছিল। ২জেলে নিখোঁজের বিষয়ে লিটন বলেন, তারা এক আত্মীয়র বাড়িতে গিয়েছিল। বন বিভাগের সাথে আমাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, ভুল লোকে আমাদের ভুল বুঝিয়েছে। এখন আমরা আমাদের নিখোঁজ হওয়া লোক, কাঁকড়া, নৌকাসহ সকল মালামাল বুঝে পেয়েছি।
বন বিভাগের কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলার কথা স্বীকার করে ইসমাইল হোসেন ওরফে লিটন গাজী বলেন, না বুঝে ভয়তে এটা করেছি। তোদের চালান দেবে, এটা করবে, সেটা করবে বলে জেলেদের ভুল বুঝিয়েছে। ভুল বুঝিয়ে এসব করিয়েছে। মুর্খ মানুষ আমরা। না বুঝে করেছি। আমরা ভুল স্বীকার করছি। এ ধরনের ভুল আমাদের আর হবে না।
চিলা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন বলেন, জেলেরা অন্যায় করছে। পাস পারমিটের যে নিয়ম আছে জেলেরা সেইটা করেনি বিধায় বন বিভাগ তাদের আটক করে। পরে বিভিন্ন লোকে জেলেদের বুঝায় যে তোদের কাঁকড়াও দেবে না ট্রলারও দেবে না তোদের চালান দেবে এই ভয়ে কিছু জেলে ভেঙেচুরে চলে গিয়েছিল। জেলেদের অপরাধ হয়েছে বিধায় বিভাগীয় বন কর্মকর্তার সহায়তায় সিআরও করে জেলেদের যা কিছু আছে আমি থেকে তাদের হাতে বুঝিয়ে দিয়েছি। নিখোঁজ দুই জেলেসহ সবাইকে আমি লিটনের হাতে বুঝিয়ে দেই।
চাঁদপাই ফরেস্ট অফিসের এসও মোঃ আনিসুর রহমান বলেন, জেলেরা প্রথমবারের মতো তাদের দোষ স্বীকার করে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে সিওআরের জন্য দরখাস্ত করে। সেই প্রক্রিয়ায় জরিমানা করে এদের মালামালসহ তাদের বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জরিমানা নির্ধারণ করবেন। আমরা ২০ জন জেলের নামে মোংলা থানায় একটি অভিযোগ করেছি তদন্ত করে তারা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন।
সেকেন্ড অফিসার জাকির হোসেন জানান, জেলেরা তাদের পাস দুবলায় জমা না দেয়াসহ কাঁকড়া পরিবহণে অবৈধভাবে ইঞ্জিন চালিত নৌকা ট্রলার, নৌকা ও কাঁকড়া জব্দ করা হয়েছিল। সিওআরের প্রক্রিয়ায় তাদের মুক্ত করা হচ্ছে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top