তেরখাদা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

1688390840.ZAkir_.jpg

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট …..
খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমেছে। একই উপজেলায় টানা প্রায় ১ দশক অবস্থান করছেন তিনি।

যে কারণে যুব উন্নয়নের অনেক কিছু তার কবজায়। তার কাছে জিম্মি উপজেলার হাজারো গ্রাহক।
পছন্দের লোকজনকে নিয়মবহির্ভূতভাবে ঋণ দেওয়া, সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে জোরজবরদস্তি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে কিস্তি আদায় এবং নিরীহ গ্রাহকদের সঞ্চিত অর্থ ফেরত দিতে নানান টালবাহানা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ঋণ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব বিষয়ে খুলনা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করলেও সুফল মেলেনি ক্ষতিগ্রস্তদের।

সম্প্রতি এসব বিষয়ে খুলনাস্থ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ৩২ জন ভুক্তভোগী। লিখিত অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগীরা বলেছেন, তেরখাদা উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে পরিবার ভিত্তিক যুব ঋণ গ্রহণ করে প্রতি মঙ্গলবার সাপ্তাহিক কিস্তি পরিশোধ করতাম। কিন্তু কোনো বিশেষ কারণে বা সরকারি ছুটির দিনে এমনকি ঈদের দিনেও একটি কিস্তি দিতে না পারলে সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জাকির হোসেন বাড়িতে এসে বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ পুলিশ প্রশাসন ও মামলার ভয় দেখিয়ে কিস্তি আদায় করতেন। যাতে ভীত হয়ে অনেকেই কিস্তি শুরু হবার অল্পদিনের মধ্যে এককালীন সমস্ত টাকা পরিশোধ করে ভীতিমুক্ত হয়েছেন।

ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, ঋণ দেওয়ার শুরুতে বলা ছিল, যারা নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করবে তাদের পুনরায় ঋণ অথবা সঞ্চয়ের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং যারা কিস্তি খেলাপি হবে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে। আমরা সঠিক নিয়মে নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করে পুনরায় ঋণ অথবা সঞ্চয়ের টাকা ফেরত চাইলে সামনের সপ্তাহে ফেরত দেবেন বলে আশ্বাস দেন জাকির হোসেন। পরবর্তী সপ্তাহে আবারো সামনের সপ্তাহে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এভাবে চলতে চলতে ঋণ পরিশোধের ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত আমাদের সঞ্চয়ের টাকা পরিশোধ করেননিই।

ভুক্তভোগীরা কেন্দ্র প্রধানের কাছে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, আমি গত ৬ মাসে বহুবার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার সঙ্গে এই বিষয়ে আলাপ করেছি। তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রে ৩/৪ জন সদস্যের অল্প কিছু টাকা বকেয়া আছে, যেটা পরিশোধ হলে সবার সঞ্চয়ের টাকা পরিশোধ করা হবে। কিন্তু বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কর্মকর্তা বকেয়া টাকা আদায়ের লক্ষ্যে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।

তিনি আরও বলেন, ওই ঋণ আদায়ের দায়-দায়িত্ব জাকির হোসেনের ওপর না থাকলেও দীর্ঘ বছর তিনি একক ও নিরবচ্ছিন্নভাবে তেরখাদায় চাকরির সুবাদে এখানকার রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালী লোকজনের সঙ্গে তার চলাফেরা। এ কারণে তাকে এলাকার সবাই ভয় করে চলে। তাই তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত না হয়েও প্রভাব খাটিয়ে টাকা আদায় করেন।

ভুক্তভোগীরা কেন্দ্র সচিবের কাছে জানতে চাইলে তিনি তাদের বলেন, আমি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি, তারা গত ৬ মাস ধরে একই কথা বলছেন, এখন অফিসে একটু কাজের চাপ চলছে, চাপ কমলে আমরা বিষয়টা নিয়ে ভেবে দেখবো।

সোমবার (৩ জুলাই) বিকেলে তেরখাদা সদরের বাসিন্দা কাদের ফকির বাংলানিউজকে বলেন, তেরখাদা উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জাকির হোসেন প্রায় ৬ মাস আগে ৪০ হাজার টাকা ঋণ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে তেরখাদা উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।

সরকারি নীতিমালায় ৩ বছরের বেশি একস্থানে থাকার বিধান না থাকলেও প্রায় এক দশক এই উপজেলায় আছেন কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১০ বছর এখনও হয়নি। ৭-৮ বছর হয়েছে। কর্তৃপক্ষ রাখে বলে আমি আছি।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top