সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি ……
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নে সরকারি খাল দখল করে দুই তলার বিশাল মার্কেট গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম আজম বাবলুর বিরুদ্ধে। এর ফলে অস্তিত্ব হারিয়েছে খালটি। ঠিকভাবে পানি প্রবাহিত হতে না পারায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় কৃষকদের।
রোববার (৩০ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ইউনিয়নের শিবনাথপুর ও কয়েলগাঁতী মৌজার বেতনালী খালের পানি প্রবাহ কয়েক বছর আগেও স্বাভাবিক ছিল। মাছ ধরার পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকরা এই খালের পানি কাজে লাগাতেন ফসলি জমিতেও। এছাড়া অতি বৃষ্টিতে স্থানীয়দের ঘর-বাড়িতে ওঠা পানি নিষ্কাশনের একমাত্র উৎস্য ছিল এই খালটি। কিন্তু ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি গোলাম আজম বাবলু খালটিকে ভরাট করে মার্কেটে রূপান্তর করেছেন। ভূমি অফিসকে ম্যানেজ করে বালু ফেলে খালটি ভরাট করে মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খাল ভরাট হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে খালের পানি প্রবাহ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কৃষক জানান, এই খালের পানি আমাদের ফসলি জমিতে কাজে লেগেছে। বৃষ্টির সময় বাড়ি-ঘরে ওঠা পানি এই খাল দিয়ে প্রবাহিত হত। কিন্তু প্রভাবশালী চক্রের কারণে খালটি অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। আমরা একাধিকবার ভূমি অফিসে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পায়নি।
শিয়ালকোল ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মাসুদুর রহমান বলেন, সরকারি জায়গায় মার্কেট নির্মাণের সময় ভূমি অফিস ও ইউএনও সাহেব ওই জায়গা মাপ-জরিপ করেছিলেন। তখন মার্কেটটি সম্পূর্ণ সরকারি জায়গায় হচ্ছে মাপ-জরিপে সেটাই
পেয়েছিলেন তারা। পরে মার্কেট ভেঙ্গে দেওয়ার কথা বলে তারা চলে যান। কিন্তু আজও সেই মার্কেট দৃশ্যমান রয়েছে কিভাবে আমার জানা নেই।
শিয়ালকোল ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. হাসান আলী বলেন, আমি এখানে ৫ মাস হলো এসেছি। সরকারি জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে কেউ যদি সরকারি জায়গা দখল করে মার্কেট ও বাড়ি নির্মাণ করেন তাহলে সেটা ভেঙ্গে দেওয়া হবে।
সরকারি খাল ভরাট করে মার্কেট নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম আজম বাবলু বলেন, আমি আমার ৩৬ শতক জমির ওপরে মার্কেট নির্মাণ করেছি। নিচ তলায় ১২টি ও দ্বিতীয় তলায় ১২ রুম তৈরী করে ভাড়া দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, মার্কেটের নিচ নিয়ে পাইপ দিয়েছি। সেই পাইপ দিয়েই বর্তমানে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। এতে কারও সমস্যা হচ্ছে না।
শিয়ালকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম রেজা বলেন, কেউ সরকারি জায়গা দখল করেছেন কিনা আমার জানা নেই। কাগজপত্র দেখে বিষয়টি জানানো হবে।
সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) এস.এম রাকিবুল হাসান বলেন, সরকারি খাল দখলের বিষয়টি আমি অবগত নয়। আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশুকাতে রাব্বী বলেন, খাল ভরাট করে মার্কেট নির্মাণের বিষয়ে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।