সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট…
খুলনার ডুমুরিয়ায় সরকারি খাল ভরাট করে একটি আবাসন প্রকল্পের রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। গুটুদিয়া ইউনিয়নের বিলপাবলা মৌজার সিটি বাইপাস সড়কের পাশের হাটুর দোয়ানি খালটির প্রায় দুই একর জমি ‘তানিসা আবাসন প্রকল্প’ নামে একটি আবাসন প্রকল্পে যাতায়াতের জন্যে এ খাল ভরাট করা হয়েছে। এতে বর্ষা মৌসুমে এলাকায় জলাবদ্ধতার হুমকীতে পড়েছে এলাকার কৃষকরা। জানা গেছে, উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নের বিলপাবলা মৌজাসহ বিভিন্ন এলাকায় আবাসন প্রকল্পের ব্যবসায়ীদের আগ্রাসনে কমে যাচ্ছে কৃষি জমি। বিলপাবলা মৌজাসহ বিভিন্ন এলাকায় সরকারি খাল ও জমি কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি মাটি ও বালু ভরাট করে বিক্রি ও ভোগ দখল করছে। জানা যায়,ওই মৌজায় ২৬৩৪ হেক্টর কৃষি জমি এবং ৪৫০০ একর সরকারি জলাশয় ও ভূমি রেয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৭’শ হেক্টর কৃষি জমি ও ২’শ একর সরকারি খাল ভরাট করে গড়ে তোলা হচ্ছে হাউজিং প্রকল্প। প্রকল্পের রাস্তা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বসতিসহ নানা কাজে অকৃষি জমির উপর যেন বেশি নজর পড়ছে আবাসন প্রকল্পের ব্যবসায়ীদের। গুটুদিয়ার মোস্তফার মোড় সংলগ্ন সিটি পাইপাস সড়কের পাশে হাটুর দোয়ানী নামক খালটি ভরাট করে ‘তানিসা আবাসিক প্রকল্প’ এ যাতায়াতের রাস্তা তৈরি করছে কর্তৃপক্ষ। ৩৫ থেকে ৫০ ফুট পর্যন্ত চওড়া খালটির প্রায় অর্ধ কিলোমিটারের বেশি জায়গা ইতোমধ্যে ভরাট করা হয়ে গেছে। যে খালের সাথে বড় দোয়ানী ও ময়ুর নদীর সংযোগ ছিলো। বিলের পানি নিষ্কাশনে গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা রাখতো খালটি। কিন্তু খালটি ভরাট করায় জলাবদ্ধতার হুমকীতে পড়ছে বিলটি। এ প্রসঙ্গে স্হানীয় কৃষক ইন্দ্রজিত মন্ডল জানান, ভূমি ব্যবসায়ীদের কারণে কৃষি জমি বিলিন হয়ে যাচ্ছে। তারা এত বেপরোয়া যে সরকারি খালগুলোও ভরাট করে ফেলছে। তিনি আরো বলেন, বিলের মধ্যে খাল যেভাবে ভরাট হচ্ছে তাতে আগামী বর্ষা মৌসুমে ভারি বৃষ্টি হলে এলাকায় নিশ্চিত জলাবদ্ধতা দেখা দিবে। এ বিষয়ে থুকড়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্ডা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মোস্তফার মোড় এলাকায় সরকারি খালের সম্পত্তির উপর দিয়ে ‘তানিসা আবাসিক প্রকল্প’ যাতায়াত রাস্তা করছে। আমরা ওইখানে সরকারি সম্পত্তি লিখে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে ছিলাম। কিন্তু কে-বা কারা তা ফেলে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, বিলপাবলা মৌজায় হাউজিং ব্যবসায়ীরা অনেক সরকারি সম্পত্তি দখল করে বসে আছে। এ বিষয়ে তানিসা আবাসিক প্রকল্পর মালিক শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আবাসনের যারা প্লট কিনছে তারা নিজ উদ্যােগে সরকারি সম্পত্তির উপর দিয়ে রাস্তা করছে। সরকার চাইলে আমাদের কোন আপত্তি নেই। আমরা সরকারি জায়গা দখলে রাখতে চাইনা। এ বিষয় ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান বলেন, তানিসা আবাসিক প্রকল্প ব্যবসায়ীরা সরকারি খালের জায়গা দখলে নিয়ে রাস্তা করছে শুনেছি। আমরা খালটি খনন করার উদ্যােগ নিয়েছি এবং সে লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে। যেহেতু খালটি অতি গুরুত্বপূর্ণ, তাই বিলে জলাবদ্ধতা নিরাসনের লক্ষে দ্রুত খনন করা হবে। এ বিষয় খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, সরকারি খাল কোনভাবে ভরাট করতে দেয়া হবেনা। এসব সম্পত্তি উদ্ধারে প্রশাসনকে অভিযান পরিচালনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।