খুলনায় ডিম-মুরগির দাম কমলেও বেড়েছে মাছের

fish-20221210140325.webp

নিজস্ব প্রতিবেদক……
খুলনার বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে ডিম ও মুরগির দাম। সরবরা বেশি থাকায় সবজির দামও কম। তবে বেড়েছে মাছের দাম। চাল, তেল আর চিনির বাড়তি দামে কোনো হেরফের নেই। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) নগরীর বড় বাজারের গিয়ে এমনটা জানা যায়।

বাজারে ডিমের হালি ৩২-৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের সঙ্গে সঙ্গে ব্রয়লার মুরগির দামও কমে গেছে। গত সপ্তাহে ১৬০-১৬৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগির দাম আজ নিচ্ছে ১৪০ টাকা।

নগরীর টুটপাড়া জোড়াকল বাজার, মিস্ত্রিপাড়া বাজার, ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজার ও রূপসা বাজার ঘুরে জানা যায়, গত সপ্তাহের চেয়ে মাছের আমদানি অনেক কমে গেছে। গোন চললেও মাছের আমদানি কম আর দাম বেশি। এতে হতাশ ক্রেতারা।

টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের মাছ ব্যবসায়ী নিয়ামত আলী, বাদশা হাওলাদার, আব্দুর রহিম রমজান আলী, নান্টু জানান, গত সপ্তাহের চেয়ে খুলনার বাজারে এখন মাছের আমদানি কম। চিংড়ি, রুই কাতলা, মৃগেল, গ্রাস কার্প, তেলাপিয়া, পাঙ্গাশ, পাবদা, পার্শে, শোল, টাকি, ইলিশের দাম এখন অনেক বেশি।

এ বিক্রেতারা আরও জানান, বাজারে এখনো ইলিশ মাছের বেশ চাহিদা আছে। তবে সরবরাহ তেমন একটা নেই। জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। সাইজ একটু বড় হলে তা বিক্রি হচ্ছে ৭-৮০০ টাকা কেজি। এছাড়া রুই, কাতলা, মৃগেল মাছ আকার ভেদে ২০০-৩০০ টাকা, পার্শে সাইজ ভেদে ৪০০-৫৫০ টাকা, চাষের পাঙ্গাস ১৫০-২৫০ টাকা, রূপচাঁদা ৬০০-১০০০ টাকা, পাবদা ৩০০ টাকা, দেশি মাগুর ৬০০ টাকা, সিং মাছ ৪০০-৫৫০ টাকা, দেশি কৈ ৪০০ টাকা, শোল ৫০০ টাকা, ভেটকি ৪০০-৫০০ টাকা, আইড় আকার ভেদে ২৫০-৪৫০ টাকা, ভোলা ৩০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৫০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাজারে খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, চিনির দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। কোম্পানির পছন্দের পণ্য না নিলে মিলছে না তেল।

খুলনায় ডিম-মুরগির দাম কমলেও বেড়েছে মাছের

পাইকারি ব্যবসায়ীদের উল্টো অভিযোগ, খুচরা ব্যবসায়ীরা বাজারে পাইকারি দরে চাল কিনে বেশি দামে বিক্রি করছেন। এক কেজি চলে খুচরা ব্যবসায়ীরা ৬-৭ টাকা পর্যন্ত লাভ করছেন।

খুলনার বড় বাজারে র‌্যাবের অভিযানের পর এখন খোলা বাজারের (ওএমএস) ডিলারদের কাছ থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে কিনে তা ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি করছেন এমন অভিযোগও করেছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

এ বাজারের দিনাজপুর ভান্ডারের প্রোপ্রাইটর মো. ফারুক বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে চালের বিক্রি বেশি হবে বলে আশা করছি। বাজারে নতুন চাল আসছে। দু-চারদিনের মধ্যে নতুন চালের আমদানি আরও বাড়বে। এতে চালের দামও কমবে।

সবজি বাজারে যেন শেয়ার বাজারের হাওয়া লেগেছে। সবজির দরপতন অব্যাহত আছে। এখন বাজারে ৩০ টাকা কেজি দরে বা তার চেয়েও কম দামে পাওয়া যাচ্ছে শীতকালীন সবজি। যা আরও কমবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

নগরীর জোড়াকল বাজারের সবজি বিক্রেতা রানা, মনির, মাসুমরা জানান, বর্তমানে বাজারে ফুলকপি ৩০ টাকা, বিটকপি ২০-২৫ টাকা, বাঁধাকপি ২৫ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৩০-৪০ টাকা, সিম প্রতিকেজি ৩০ টাকা, টমেটো ৬০-৮০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, ঝিঙে ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, আলু ২৮-৩০ টাকা, মূলা ২০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ২০-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহিনুর আলম শিকদার জাগো নিউজকে বলেন, খুলনার বাজারে নিত্য পণ্যের দাম মোটামুটি স্বাভাবিক আছে। বাজারদর স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, শুধু ভোক্তা অধিকারই নয়, র‌্যাব জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। ফলে পণ্যের দাম বেশি নেওয়ার সুযোগ থাকছে না। এধরনের কোনো অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top