নিজস্ব প্রতিবেদক…..
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় এনজিও কর্মীর টাকা ছিনতাইয়ের পর পালাতে গিয়ে জনতার ধাওয়া খেয়ে তপন হালদার (৫৫) নামে এক ছিনতাইকারীর আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে ডুমুরিয়া বাসস্ট্যান্ড মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোনালী ব্যাংকের ডুমুরিয়া বাজার শাখা থেকে সোমবার দুপুরে ‘ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশে’র (এনজিও) কর্মী শিলা মণ্ডল ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা তুলে ব্যাগ নিয়ে কর্মক্ষত্রে যাওয়ার জন্য বাজারের মধ্যদিয়ে হাঁটছিলেন। পথিমধ্যে পূবালী ব্যাংক মোড়ে পৌঁছালে এক ছিনতাইকারী হঠাৎ তার কাছ থেকে টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে দৌড়ে খুলনা-সাতক্ষীরা সড়ক পেরিয়ে আরাজী ডুমুরিয়া গ্রামের দিকে পালিয়ে যান।
ওই সময় শিলা এক মোটরসাইকেল চালককে অনুরোধ করে দ্রুত ছিনতাইকারীর পিছু নিয়ে তাকে আরাজী ডুমুরিয়া-মির্জাপুর মোড় পর্যন্ত খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে ওই ছিনতাইকারীকে ব্যাগ নিয়ে হাঁটতে দেখে তার পিছু নেন। তবে কিছুক্ষণ পর আবার তিনি হারিয়ে যান। ওই ঘটনার ঘণ্টাখানেক পর ডুমুরিয়া বাসস্ট্যান্ড মোড়ে ‘ছিনতাইকারীর সন্ধান মিলেছ’ এমন খবর পেয়ে শিলা আরাজী ডুমুরিয়া গ্রামে যান। সেখানে সোহরাব গাজীর বাড়ির কাছে পৌঁছে ছিনতাইকারী তপন হালদারকে অচেতন অবস্থায় মাটি পড়ে থাকতে দেখেন। তখন তার মুখ দিয়ে ফ্যানা বের হচ্ছিল।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তপনকে তুলে ডুমুরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তপনের দেহ থেকে ছিনতাই হওয়া টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনা চলাকালে ডুমুরিয়া মোড় থেকে এলাকাবাসী ছিনতাইকারী চক্রের অপর সদস্য আলতাপ হাসানকে (৪৩) আটক করে পুলিশর হাতে তুলে দেয়।
এ প্রসঙ্গে শিলা মণ্ডল বলেন, সোনালী ব্যাংক থেকে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা তুলে যাওয়ার সময় ফল মার্কেট এলাকায় পৌঁছালে আমার কাছ থেকে হঠাৎ ব্যাগটা টান মেরে নিয়ে পালায় ছিনতাইকারী। অনেক খোঁজাখুঁজি শেষে আরাজী ডুমুরিয়া গ্রাম থেকে ছিনতাইকারী তপন হালদারকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। আর তার কাছ থেকে আমার ছিনতাই হওয়া টাকাও উদ্ধার হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ডুমুরিয়া ইউপি সদস্য লুৎফর রহমান মোড়ল বলেন, আমরা ওই নারীর অনুরাধে ছিনতাইকারীকে ধরতে চেষ্টা করতে থাকি। একপর্যায়ে সোহরাব মোড়লের বাড়ির বাথরুম থেকে মৃত অবস্থায় ছিনতাইকারীকে উদ্ধার করেছি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ কনি মিয়া বলেন, মৃত তপন হালদার খুলনার দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া এলাকার নলিনী হালদারের ছেলে। তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তপন হার্টের রোগী ছিলেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ওরা চারজনের একটা ছিনতাইকারী চক্র। এ ঘটনায় শিলা মণ্ডলের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা হয়েছে।