বাঁধ উড়িয়ে ইউক্রেনের দক্ষিণাংশ তলিয়ে দিতে চান পুতিন?

untitled-1-20221022102520.webp

আন্তর্জাতিক ডেস্ক…..
রাশিয়া ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের অতিগুরুত্বপূর্ণ একটি বাঁধ উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে দাবি করেছে কিয়েভ। এরই মধ্যে বাঁধটির গায়ে বিস্ফোরক বসানো হয়েছে বলে দাবি তাদের। এই বাঁধ ধ্বংস করা হলে ইউক্রেনের বিশাল এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাবে। তাতে অগণিত মানুষের প্রাণহানিরও আশঙ্কা রয়েছে। বাঁধটিকে রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। খবর রয়টার্সের।

টেলিভিশনের এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেছেন, নোভা কাখোভকা বাঁধে বিস্ফোরক বসিয়েছে রুশ বাহিনী এবং সেটি উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তিনি বলেন, এখন রাশিয়ার একটি নতুন ‘সন্ত্রাসী হামলা’ ঠেকাতে বিশ্বের সবাইকে শক্তিশালীভাবে এবং দ্রুত কাজ করতে হবে। বাঁধটি ধ্বংস করার মানে হবে বড় মাত্রার বিপর্যয়।

সুদীর্ঘ দিনিপ্রো নদী ইউক্রেনকে দুইভাগে বিভক্ত করেছে এবং কিছু কিছু জায়গায় এটি কয়েক কিলোমিটার প্রশস্ত। এই নদীর ওপর তৈরি বাঁধটি ধ্বংস হয়ে গেলে আশপাশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবে। এতে ইউক্রেনের দক্ষিণাংশে পানি সেচ ব্যবস্থাও ভেঙে পড়বে।

বাঁধটির গুরুত্ব
* ৩০ মিটার উঁচু ও ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার লম্বা বাঁধটি তৈরি হয় ১৯৫৬ সালে। কাখোভকা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অংশ হিসেবে নির্মিত হয়েছিল এটি।

* এতে ১৮ কিমি আয়তনের বিশাল জলাধার রয়েছে, যা ক্রিমিয়া উপদ্বীপ ও জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পানি সরবরাহ করে। এ তিনটিই বর্তমানে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

* জলাধারে থাকা পানির পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্রের ইউটা রাজ্যের গ্রেট সল্ট লেকের সমান। সোভিয়েত আমলের বাঁধটি উড়িয়ে দিলে খেরসন অঞ্চলের বেশিরভাগ অংশে ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি হবে।

* কাখোভকা জলবিদ্যুৎকেন্দ্র ধ্বংস হলে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ সমস্যাও আরও প্রকট হয়ে উঠবে।

অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ

সম্প্রতি জাপোরিঝিয়া, খেরসন, লুহানস্ক ও দোনেৎস্ককে নিজেদের অংশ বলে ঘোষণা করেছে রাশিয়া। তবে খেরসনে এখনো তীব্র লড়াই চলছে। সেখানে রুশ বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন।

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর কমান্ডার সের্গেই সুরোভিকিন গত মঙ্গলবার বলেছেন, তার কাছে তথ্য রয়েছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী বাঁধের ওপর হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা এরই মধ্যে একটি বড় হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা হিমার্স ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।

সুরোভিকিন বলেন, কিয়েভ সরকার খেরসনে যুদ্ধে নিষিদ্ধ পদ্ধতি ব্যবহার এবং কাখোভকা বাঁধে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রস্তুতির বিষয়ে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।

তবে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, বাঁধটি মস্কো নিজেই উড়িয়ে দিয়ে এর দায়ভার কিয়েভের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করতে পারে।

জেলেনস্কি বলেছেন, আমি ইউরোপীয় কাউন্সিলের বৈঠকে পরবর্তী সন্ত্রাসী হামলা সম্পর্কে জানিয়েছি। রাশিয়া কাখোভকা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তবে খেরসন অঞ্চলের রুশপন্থি উপপ্রধান কিরিল স্ট্রেমাসভ বলেছেন, বাঁধটিতে রাশিয়া বিস্ফোরক বসিয়েছে বলে কিয়েভ যে অভিযোগ করেছে, তা মিথ্যা।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top