জেলা প্রতিনিধি………
নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী। এ তালিকায় বাদ যায়নি লবণও। নওগাঁয় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে খোলা লবণের দাম। গত দুই মাসের ব্যবধানে লবণের দাম বেড়েছে প্রতি ৫০ কেজির বস্তায় ১০০-১১০ টাকা।
খোলা লবণ বিশেষ করে পশুখাদ্য, কারখানা ও চামড়ায় ব্যবহৃত হয়। হঠাৎ করে লবণের দাম বাড়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন ভোক্তারা। এজন্য উৎপাদনকারী সিন্ডিকেটকেই দুষছেন পাইকারি বিক্রেতারা।
আগামীতে খোলা লবণ বস্তাপ্রতি আরও ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে প্যাকেটজাত লবণ প্রতি কেজি ৩২-৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত লবণ উৎপাদনের সময়। এবছর বৃষ্টিতে লবণ উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। বছরের শেষ সময়ে এসে লবণ উৎপাদন কম হওয়ায় বাড়ছে দামও। গত দুই মাসের ব্যবধানে ৫০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা খোলা লবণের দাম বেড়েছে ১১০ টাকা।
নওগাঁ শহরে প্রায় ১০ জন খোলা লবণের পাইকারি বিক্রেতা আছেন। শহরের সুপারিপট্টির পাইকারি বিক্রেতা মিজানুর রহমান বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর ৫০ কেজির বস্তা মোকাম থেকে ৭৪০-৭৫০ টাকা কিনে আনি। এরসঙ্গে লোড-আনলোডসহ আনুষঙ্গিক আরও ৯০ টাকা যোগ হবে। এতে এক বস্তা খোলা লবণ দোকান পর্যন্ত পৌঁছাতে ৮৩০-৮৪০ টাকা খরচ হয়। সেখানে বিক্রি করা হয় ৮৬০ টাকা বস্তা।
তিনি বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) চট্টগ্রাম মোকামে খোঁজ নিয়ে জানলাম ৯৭০ টাকা বস্তা। এখন আনুষঙ্গিক আরও ৯০ টাকা যোগ করে বস্তাপ্রতি দাম পড়বে এক হাজার ৬০ টাকা।’
চলতি মৌসুমে বৃষ্টি বেশি হওয়ায় লবণে ঘাটতি শুরু হয়েছে বলে মনে করেন এ পাইকারি বিক্রেতাে। এজন্য লবণের বাজার ঊর্ধ্বমুখী।
আরেক পাইকারি বিক্রেতা লিয়াকত আলী বলেন, মোকামে লবণ ব্যবসায়ীরা মৌসুমে মাল কিনে মাটিতে গর্ত করে গুদামজাত করে রাখেন। তারা এ লবণের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। তারা যে দাম চান সে দামে কিনতে বাধ্য হতে হই আমরা।
তিনি বলেন, ‘আসলে মাঠে কী পরিমাণ লবণ আছে সে বিষয়ে এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনের তদারকি করা দরকার। অন্যথায় লবণের দাম বস্তাপ্রতি আরও ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বদলগাছী উপজেলার ভান্ডারপুর গ্রামের মেসার্স সিয়াম ডেইরি ফার্মের উদ্যোক্তা সিয়াম জাগো নিউজকে বলেন, এক বস্তা লবণ ১০টি গরুর ১৫-২০ দিন যায়। এমনিতেই পশুখাদ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। তারমধ্যে আবার লবণেরও দামও বাড়তি। পশু খামারিরা দিন দিন হুমকির দিকে চলে যাচ্ছেন। এতে উদ্যোক্তারা পশুপালনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।
চট্টগ্রামের মাঝিরঘাটের পাইকারী লবণ ব্যবসায়ী মেসার্স সামিয়া ট্রেডার্সের মালিক রানা হাসান বলেন, বর্তমানে খোলা লবণ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৮৮০ টাকা বস্তা। গতমাস আগে যা বিক্রি হয়েছে ৭৮০ টাকা। সর্বোচ্চ আরও ৫০ টাকা পর্যন্ত লবণের দাম বাড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি।