মানবতাবিরোধী অপরাধ খুলনার আব্দুর রহীমসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ অব্যাহত

tribunal-new-20220915215307.webp

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক….
একাত্তরে সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার ৯ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আনা ২২ ও ২৩ নম্বর সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

তাদের নিরাপত্তার সমস্যা হতে পারে এ কারণে সাক্ষীর নাম প্রকাশ করেননি প্রসিকিউশন টিম। তবে সর্বশেষ সাক্ষী হিসেবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার (আইও) সাক্ষ্যগ্রহণ করার কথা রয়েছে আগামী ২৪ অক্টোবর। ওইদিন তিনি (আইও) তার জবানবন্দি পেশ করার কথা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার নির্ধারিত দিনে রাষ্ট্রপক্ষের আনা ২২ ও ২৩ নম্বর সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আগামী ২৪ অক্টোবর পরবর্তী দিন ঠিক করে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্যান্য দুই সদস্য হলেন-বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম।

আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ও প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী। তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার শেখ মোশফেক কবির। অন্যদিকে আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট গাজী এমএইচ তামিম ও অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।

এর আগে ২০১৭ সালের ২৩ এপ্রিল পলাতক দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া অন্যান্য আসামিসহ তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

আর মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বলেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু ওই দুই আসামির মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা গেলেও অন্য একজন এখনো পলাতক রয়েছেন। আর গ্রেফতার হওয়ার মধ্যে থেকে স্বাস্থ্যগত কারণে শর্তসাপেক্ষে নাজের আলী ফকিরসহ (৬৮) দুই জন জামিনে রয়েছেন।

এর আগে ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে খুলনা থেকে সাতজন এবং ঢাকা ও গাজীপুর থেকে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে খুলনায় মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে একটি মামলায় জড়িত থাকার প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন।

আসামীরা হলেন-শেখ আবদুর রহিম (৬৮), শামসুর রহমান গাজী (৮২), জাহান আলী বিশ্বাস (৬৭), মো. শাজাহান সরদার (৬৭), আবদুল করিম শেখ (৬৫), আবু বক্কর সরদার (৬৭) ও রওশন আলী গাজী (৭২)। ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে মো. সোহরাব হোসেন (৬২) ও গাজীপুর থেকে নাজের আলী ফকির (৬৫) নামের আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বাড়িও ডুমুরিয়ায়।

প্রাথমিকভাবে তাদের ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ফুলতলা থানায় করা বাস পোড়ানোর একটি মামলায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় বলে জানিয়েছিলেন খুলনা জেলা ডিবির ওসি আক্কাস আলী।

তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, গ্রেফতার আসামিরা ১৯৭১ সালের ১৮ মে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া গ্রাম থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আব্দুল লতিফ মোড়ল ও কাওসার শেখসহ ৯ জনকে ধরে বকুলতলা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে তাদের গুলি করে হত্যার পর মরদেহ নদীতে ফেলে দেয়। সেখান থেকে জীবন নিয়ে একজন পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। ওই ঘটনায় খর্নিয়া গ্রামের লিয়াকত আলী গাজী বাদী হয়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ডুমুরিয়া থানায় মামলা করেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top